ছবি: বহুমাত্রিক.কম
খুলনা : সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, বর্তমানে যে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে, হলিআর্টিজনে হামলার মত জঘন্য হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে তা মানুষ নামের দানবদের পক্ষেই সম্ভব। এইসব দানবদের পেছনে রয়েছে এক ধরণের অপশক্তি, যারা আমাদের তরুণদের মস্তিষ্ককে ব্যবহার করে তাদের বিভ্রান্ত করছে। এই যে অপশক্তি মানুষের মানবিক চেতনাকে নি:শেষ করে দিচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।
মন্ত্রী রোববার খুলনা বিএমএ ভবনে গণহত্যাণ্ড নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পাঠক্রমের ‘সনদ বিতরণ ও ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন নির্ঘন্ট গ্রন্থমালার মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতার আহবানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানী আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে যাঁরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন, তারা অনেকেই ছিলেন নিরক্ষর, দরিদ্র এবং সাধারণ মানুষ। অসামান্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এইসব তরুণেরা মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে পৃথিবীর অন্যতম একটি দক্ষ বাহিনীর বিরুদ্ধে যে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেই অনুপ্রেরণার উৎস ছিল একটি মানুষের বজ্রকন্ঠে উচ্চারিত বাণী। স্বাধীন বাংলা বেতারে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য সেদিন উদগ্রীব হয়ে থেকেছে দেশের প্রতিটি মানুষ।
তিনি বলেন, স্বাধীনতাকামীদের এই প্রতিরোধ ব্যুহ ভাঙতে পাকিস্তানি দোসররা যে গণহত্যা আর ধবংসযজ্ঞ চালিয়েছে তার চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে দেশের গ্রামেগঞ্জে সবখানে। এটাকে সামনে আনতে হবে, জাতিকে জানাতে হবে তার ইতিহাস। এই গণহত্যার বিচার এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন অন্যায় করে কেউ পার পায়না।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একাত্তরে গণহত্যাকারীদের প্রেতাত্মারা এখনও দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের থেকে সমাজ ও মানুষকে বাঁচাতে মানুষের মাঝে যে সুকুমার বৃত্তি রয়েছে তাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। তিনি সমবেত অতিথি এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু পুঁথিগত বিদ্যার মাধ্যমে এটা সম্ভব না, এজন্য সšতানদের মাঝে সাংস্কৃতিক এবং মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি মুনতাসির মামুন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রাস্টের সম্পাদক ডা. শেখ বাহারুল আলম। অন্যান্যর উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠান শেষে তিনি গবেষণা কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ৩০ জনকে সনদ প্রদান করেন। পরে মন্ত্রী নির্মাণাধীন খুলনা বিভাগীয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমী ভবন পরিদর্শন করেন।
বহুমাত্রিক.কম