Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

খুলনায় ২০ সিনেমা হলের মধ্যে ১৪টি বন্ধ

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:০১, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

খুলনায় ২০ সিনেমা হলের মধ্যে ১৪টি বন্ধ

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

খুলনা : ডিশ লাইনের সহজলভ্যতা, ভারতীয় সিরিয়ালের জনপ্রিয়তা, ভিডিও পাইরেসি, মোবাইল ফোনে সিনেমা দেখা, অশ্লীল ছবির প্রভাব সর্বোপর্রি মানসম্মতভাবে কাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণ না হওয়ায় দর্শকরা হলগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। দর্শকশুন্যতার কারণে লোকসানের ঘানি থেকে মুক্তি পেতে মালিক পক্ষ বাধ্য হয়েই সিনেমা হল বন্ধ করে দিচ্ছেন।

ইতিমধ্যে ২০ টি সিনেমা হলের মধ্যে ১৪টিই বন্ধ হয়ে গেছে। সচল থাকা বাকী ৬টি হলের প্রদর্শনী চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। ফলে দিন দিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে খুলনার বিনোদনের ক্ষেত্র।

একটা সময় ছিল যখন ঈদ আসলেই এক শ্রেণির তরুণ গ্রাম থেকে শহরে আসত সিনেমা দেখতে। তারা কাউন্টার থেকে টিকিট নিতে ব্যর্থ হয়ে কালোবাজারের বিক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি টাকা দিয়ে টিকিট কিনে সিনেমা দেখত। অনেক সময় হল হাউজফুল হয়ে যেত তখন এক্সট্রা ফোল্ডিং চেয়ার দেয়া হত। যাতে গাদাগাদি করে বসে দর্শকরা সিনেমা দেখত। কিন্তু এখন সেই অবস্থা নেই। এখন সিনেমা হল বেশিরভাগ খালি থাকে কোন কোন সময় বিদ্যুত খরচ ওঠানোই দুস্কর হয়ে পড়ে।

জানা গেছে, সময়ের পরিক্রমায় উপজেলাসহ খুলনা মহানগরীতে অন্তত: ২০ টি সিনেমা হল গড়ে উঠে। এগুলো হচ্ছে মহানগরীর শঙ্খ, সঙ্গীতা, সোসাইটি, চিত্রালী, জনতা, ঝিনুক, পিকচার প্যালেস, উল্লাসিনী, বৈকালী, স্টার, লিবার্টী, মিনাক্ষী, ডুমুরিয়া উপজেলায় নাগমা (বর্তমান শঙ্খমহল), চুকনগরের হিরামণ, তালা উপজেলার ফালগুনী, রূপসার উপজেলার রূপসা সাগর, পাইকগাছার বাসুরী, কপিলমুনির সোহাগ, সেনহাটির রূপসা ও ফুলতলার শাপলা।

এসব সিনেমা হলগুলোর মধ্যে ঝিনুক, পিকচার প্যালেস, উল্লাসিনী, বৈকালী, স্টার, মিনাক্ষী, ডুমুরিয়া উপজেলায় শঙ্খমহল, চুগনগরের হিরামণ, তালার ফালগুনী, রূপসার উপজেলার রূপসা সাগর, পাইকগাছার বাসুরী, কপিলমুনির সোহাগ, সেনহাটির রূপসা ও ফুলতলার শাপলা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। অস্তিত্ব হারিয়েছে স্টার ও বৈকালী সিনেমা হল দুটি। বর্তমানে নগরীতে শুধুমাত্র শঙ্খ, সঙ্গীতা, সোসাইটি, চিত্রালী, লিবার্টি ও জনতা এই ৬টি সিনেমা হল চালু রয়েছে। ঈদ ও পূজার সময়ে কয়েকদিন চলে ডুমুরিয়ার শঙ্খমহল সিনোমাহলটি। বছরের অন্য সময় সিনেমা হলটি বন্ধ থাকে ।

নগরীর সঙ্গীতা সিনেমা হলে ছবি দেখতে আসা দর্শক সাইফুল ইসলাম, আকরাম হোসেন ও ইফতি বলেন, এক সময় সিনেমা হলগুলো প্রচুর দর্শকের সমাগম ঘটতো। কিন্তু সিনেমা পাড়ায় এখন অশ্লীল ছবি প্রভাব পড়েছে। নেই ভালো পরিবেশ। এছাড়া বাসায় বসে ডিশ লাইন, ইউটিউব, টুইটার, ইন্টারনেট মাধ্যমে ডাউন লোড দিয়ে নতুন মুক্তি প্রাপ্ত ছবি দেখা যায়। এ কারণে সিনেমা হলগুলোতে এখন আর দর্শক আর আসতে চান না।

শঙ্খ সিনেমা হলের জনৈক কর্মকর্তা বলেন, ডিশ লাইন, ভিডিও পাইরেসি, অশ্লীল ছবির প্রভাব ও মানসম্মতভাবে নির্মাণ না হওয়ায় দর্শকরা হল থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। আর হলগুলো দর্শক শূণ্য হয়ে পড়ায় লোকসানের মুখে পড়ছে হচ্ছে মালিকরা। ফলে তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে বাধ্য হচ্ছেন।

সঙ্গীতা সিনেমা হল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ফলে মানুষ বর্তমানে ঘরে বসেই নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি দেখে ফেলছে। যার ফলে দর্শক এখন আর সিনেমা হলগুলোতে আসতে চাচ্ছেন না। দর্শক না আসায় আয়ের থেকে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আর লোকসানের মুখে পড়ে এগুলো বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer