Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

খুলনার অর্থনৈতিক জোন স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:৪৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

খুলনার অর্থনৈতিক জোন স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে

খুলনায় দু’টি অর্থনৈতিক জোন স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ছবি : বহুমাত্রিক.কম

খুলনা : খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার কোলা পাটগাতি মৌজা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার তেতুলতলা মৌজায় দু’টি অর্থনৈতিক জোন স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণের জন্য অনুমতি চেয়ে দাপ্তরিক চিঠি দেয়া হয়েছে। সারাদেশের তুলনায় খুলনার দু’টি অর্থনৈতিক জোন সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে অগ্রগতি চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১২টি অর্থনৈতিক জোন অনুমোদিত হয়েছে। তার মধ্যে একটি বেসরকারি পর্যায়ের বাকিগুলো সরকারি তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠবে। শিল্প খাতের দ্রুত বিকাশ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান, রফতানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণে উৎসাহ প্রদান, পশ্চাৎপদ ও অনগ্রসর এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক জোন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নিয়েছে। মংলা অর্থনৈতিক জোনের ডেভেলপার নিয়োগ হয়েছে। আগামী ১৫ বছরের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে এসব অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থনৈতিক জোনের কার্যক্রম প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছে। গত ১১ ডিসেম্বর ভারতীয় ভারতীয় হাইকমিশন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সহ একটি প্রতিনিধিদল খুলনা-মংলা রেললাইন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। গত বছর (২০১৬) জুন মাসে ভারতীয় একটি প্রতিনিধিদল বটিয়াঘাটা উপজেলায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন পরিদর্শন করেন। ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন ভারতের এক্সটারনাল মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অজিত ভেনায়েক গুপ্ত, উপ-সচিব প্রেম কে নীর, আন্ডার সেক্রেটারি ভিপুল কুমার মিশরী এবং ভারতের এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ (কনসালট্যান্ট)। এছাড়া ওই বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল জোনস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করছেন, দেশীয় শিল্পপতিরা ছাড়াও জাপান, কোরিয়া, ভারত, পানামা, তুরস্ক, ইউক্রেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, ইতালি, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সংযুক্ত আরব আমিরাত নতুন অর্থনৈতিক জোনে পুঁজি বিনিয়োগ করবে। দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক জোনে সয়াবিন তেল, সুপারি, বাইসাইকেল, তাঁবু, ক্যামেরার লেন্স, কেমিক্যাল শিল্প, প্লাস্টিক দ্রব্য, এনার্জি সেভিং বাল্ব, গাড়ির যন্ত্রাংশ, বুলেটগ্রুফ জ্যাকেট, চশমা, ব্যাটারি, ধাতব শিল্প, গলফ শ্যাফট, জুতার এক্সেসরিজ ইত্যাদি উৎপাদন হবে।

খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নে তেঁতুলতলায় ৫৯৪ একর ও ওপর তেরখাদা উপজেলার কোলা পাটগাতী মৌজায় ৫১৭ একর জমি নিয়ে দুটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ কয়েকদফা প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

অর্থনৈতিক জোন সম্পর্কে বটিয়াঘাটা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের তফশিলদার জগন্নাথ ঘোষ জানান, ভূমি মন্ত্রনালয়ের নির্দেশেজেলা প্রশাসকের এল,এ শাখায় একটি প্রথমিক কার্যক্রমের নির্দেশ আসে,সেই নির্দেশ মোতাবেগ সার্ভেয়ার দ্বারা মেপে ভূমির প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান এ ব্যাপারে আমাদেও কাছে কোন নির্দেশনা আসে নাই। জলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুজ্জামান আশিক জানান, আমাদের কাছেও কোন চিঠি বা নির্দেশনা আসেনি।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ্জামান বলেন, খুলনায় দুট অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে খুলনায় নতুন নতুন শিল্প কল- কারখানা গড়ে উঠবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দরের গতিশীলতা আরও বাড়বে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর উন্নয়নের সেতুবন্ধন গতিশীল হবে। সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিনুল আহসান বলেন, তেরখাদা উপজেলার কোলা পাটগাতি মৌজা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার তেতুলতলা মৌজায় দু’টি অর্থনৈতিক জোন স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। তেরখাদা কোলা পাটগাতি মৌজায় প্রস্তাবিত ৫১৭ একর জমির মধ্যে সরকারী জমি রয়েছে ২৫৬ একর। এছাড়া ও বটিয়াঘাটার তেতুলতলা মৌজায় ৫৯৪ একর জমিতে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোনে সরকারী খাস জমি প্রায় অর্ধেক। জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিক অনুমতি চেয়ে গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আন্তরিক। বর্তমান সরকার আমলে খুলনায় সরকারী অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি বেসরকারী শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠেছে। দু’টি অর্থনৈতিক জোন নির্মিত হলে খুলনাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে। এ অঞ্চলের বেকার সমস্যার সমাধান হবে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আসবে। পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা পাল্টে যাবে।

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer