Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

খুলনা মহানগরীতে বেহাল ৫৮০ কিলোমিটার সড়ক

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:৫০, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

খুলনা মহানগরীতে বেহাল ৫৮০ কিলোমিটার সড়ক

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

খুলনা : বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা এবং ওযাসার পাইপ লাইন বসাতে খোড়াখুড়ি, দীর্ঘদন সংস্কার না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে নগরীর অধিকাংশ সড়কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হযেছে। সড়কগুলোতে খানাখন্দ ও ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

মহানগরীর ৬৪০ কিলোমিটার সড়কে ৫৮০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে খোড়াখুড়ি করা হয়েছে। তাছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলে এমনকি বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও অনেক সড়কে দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে নগরবাসী চরম জনদুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এই দুরবস্থা থেকে নগরবাসী কবে মুক্তি পাবে তাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।

জানা গেছে, মহানগরীতে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) তালিকাভুক্ত ছোট বড় সড়ক রয়েছে এক হাজার ২১৫টি। সড়কগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ৬৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে আড়াই শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এ ছাড়া সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের একাধিক সড়ক রয়েছে।

প্রধান সড়কসহ অনেকগুলো সড়কে ওয়াসার পানির লাইনের পাইপ বসানোর জন্য ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। যেখানে ওয়াসার খোড়াখুড়ি হয়নি এমন সড়কগুলো বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নগরীর এমন কোনো সড়ক নেই, যেখানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়নি। ইট-খোয়া সরে গিয়ে সড়কগুলোতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এসব সড়কে চলতে গিয়ে নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নগরীর ময়লাপোতা মোড় থেকে কদমতলা মোড়ের দিকে যেতে সড়কের মাঝখানে অসংখ্য গর্ত। শের-এ-বাংলা রোড, শামসুর রহমান রোড, ফারাজীপাড়া, মজিদ সরণি, সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সামনের রাস্তা, মুজগুন্নী এলাকায় দুর্ণীতি দমন কমিশন অফিসের সামনের সড়ক, খালিশপুর হাউজিং এলাকা, নিরালা ও সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানের প্রায় ৭০ ভাগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির পর রয়েল মোড় থেকে রূপসা ফেরিঘাট পর্যন্ত খানজাহান আলী সড়কটি সবচেয়ে বেশী খারাপ। চলাচলের জন্য পীচ ঢালা এ সড়কে অস্থায়ীভাবে ইটের সোলিং করে দেয়া হলেও এটি কাঁচা সড়কে রূপ নিয়েছে। নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেডিএ এভিনিউ’র পার্শ্ববর্তী ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারপ হওয়ায় বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও এই সড়কের নানা স্থানে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা থাকে।

কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো: লিয়াকত আলী খান বলেন, নগরীর সড়কের এই বেহাল দশা নিয়ে সম্প্রতি প্রকৌশলীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মেয়র। বৈঠকে দ্রুত সড়কগুলো মেরামতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি গত ১ আগস্ট সড়কের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে (ডিও) চিঠি পাঠান মেয়র।

খুলনা সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি বলেন, নগরীর সড়কগুলোর কিছু অংশের পীচ মেশিন দিয়ে কেটে ওয়াসার পাইপ বসানো হয়েছে। ওই সকল স্থান ওয়াসা মেরামত করে দেবে। ওয়াসার কাজ শেষ না হলে পীচ দিয়ে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিযেছেন। তিনি বলেন, গত আগষ্ট মাসে কেসিসি প্রকৌশলীদের সাথে বৈঠক করে জরাজীর্ণ সড়ক সংস্কার ও মেরাতের জন্য ৫০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজস্ব ব্যবস্থায় সড়কগুলো মেরামত করা হবে। তিনি জানান, বরাদ্দ চাওয়া অর্থের ব্যাপারে এখনও কোস সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।

খুলনা ওয়াসা প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ ওয়াসার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য খোড়াখুড়ির কারণে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও নগরবাসীর সাময়িক দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়রকর কিছু অংশ সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে মেরামত করে দেয়া হয়েছে। কিছু সড়ক চলাচল উপযোগী করার জন্য ইট দিয়ে সোলিং করে দেয়া হয়েছে। বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ মেরামত কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। বর্ষা শেষ হলেই ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer