Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

খুমেক হাসপাতালে চার বছরেও চালু হয়নি এইডস সনাক্তকরণ যন্ত্র

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৫৩, ১৮ জুলাই ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

খুমেক হাসপাতালে চার বছরেও চালু হয়নি এইডস সনাক্তকরণ যন্ত্র

খুলনা : সাত বছর আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এইচআইভি/এইডসের চিকিৎসা উপযোগিতা নির্ণয়ের জন্য ‘সিডিফোর’ যন্ত্র দেয়া হয়। সেটি এখন পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হয়নি। বছর চারেক আগে আনুষ্ঠানিকতা করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোগীর পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়, সিডিফোর যন্ত্রের মাধ্যমে এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত দুই ধরণের রোগীর শরীরে প্রতি তিন বা ছয় মাস অন্তর ‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা’ কী অবস্থায় আছে, তা পরিমাপ করা যায়। ২০১০ সালের ৩ আগষ্ট একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটি হাসপাতালে সরবরাহ করে। এর প্রায় দুই বছর পর ২০১২ সালের ১১ এপ্রিল মেশিনটি স্থাপনের একটি আনুষ্ঠানিকতা করা হয়। পরিক্ষার উপকরণ নেই এই অজুহাতে কোন রোগীর পরিক্ষা করা হয়নি। পরে সেটি অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হতে থাকলে তা ঢেকে রাখা হয়।

এইডস নিয়ে কাজ করে এমন এক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান মুক্ত আকাশ’এর দেয়া তথ্য মতে, খুলনায় এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ২১৯ জন। এর মধ্যে শিশু রয়েছে ৩০ জন। তারা জানান, ২০০৩ সাল থেকে খুলনায় ২৪৭ পূর্ণ বয়স্ক রোগী ও ৩০ জন শিশু মিলে ২৬৬জন রোগীকে চিকিৎসা করিয়েছেন। এর মধ্যে এর মধ্যে মারা গেছে ৪৭জন। বর্তমানে আক্রান্ত এসব রোগীর চিকিৎসায় অনেক অর্থ ব্যয় ও কষ্ট সহ্য করে কয়েক মাস অন্তর ঢাকায় গিয়ে সিডিফোর যন্ত্রে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হয়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভবনে ওই সংস্থার একটি কক্ষ রয়েছে যেখানে এইচ আইভি পজেটিভ রোগীদের কাউন্সিলিং ও পরিচর্যা করা হয়। এইডস আক্রান্ত জনৈক রোগীর স্বজন জানান, ‘প্রতি তিন মাস পরপর ওকে নিয়ে সিডিফোর করাতে ঢাকায় যেতে হয়। ঢাকায় যাওয়া-আসার ধকলে ও খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তা ছাড়া টাকা জোগাড় করতেও খুব কষ্ট হয়।’ যাওয়া আসা ও চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমসিম খেতে হয়।

মুক্ত আকাশে’র প্রকল্প সমন্বয়কারী রেহেনা বেগম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিডিফোর মেশিনটি চালু করার সময় চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, “এখন থেকে আপনারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুলনায় সিডিফোর করাতে পারবেন।” কিন্তু তারপর আমরা কয়েকবার রোগী নিয়ে পরীক্ষা করাতে গেলেও কোনো ফল হয়নি। আজও মেশিনটি প্যাথলজি বিভাগে বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।’ তিনি বলেন, সিডিফোর মেশিন চালু না থাকায় রোগীদের ঢাকা সিএমএইচ ( সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) হাসপাতালে পরিক্ষা করাতে পাঠাতে হয়। সেখানে প্রতিবার ১ হাজার ২৫০ টাকা ফি দিতে হয়। এছাড়া গুরুতর রোগীদের ভারতেও পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, গত জুন মাসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২ জন রোগী পাঠানো হয় ও অপর একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ভারতে পাঠানো হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিডিফোর মেশিনটি চালু থাকলে খুলনাতেই কম খরচে রোগীর চিকিৎসা হতে পারত।

এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: এ টি এম মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, এইডস রোগী পরিক্ষার জন্য সিডিফোর নামের কোন মেশিন আছে কিনা জানা নেই। আপনি যখন বললেন, তখন খোঁজ নিয়ে দেখব।

এ প্রসঙ্গে খুলনা জেলা প্রশাসক ও এইচআইভি এইডস সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও খুলনা জেলা প্রশাসক মো: আমিনুল আহসান বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এইচআইভি/এইডস পরিক্ষার একটি যন্ত্র আছে তা আমার জানা নেই। তিনি বলেন, খোজ নিচ্ছি; যদি থেকে থাকে তবে এটি দ্রুত চালু করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer