Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

কোরবানি সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় ৪০০ কোটি টাকার গরু পালন

এস এম জামাল, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০২:৫১, ২৪ আগস্ট ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

কোরবানি সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় ৪০০ কোটি টাকার গরু পালন

ছবি-বহুমাত্রিক.কম

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলায় বড়-ছোট মিলে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে গরু আছে প্রায় ৮২ হাজার। এসব গরু কয়েক মাস ধরে মোটাতাজা করা হচ্ছে।

গত বছর যার সংখ্যা ছিল প্রায় ৭৪ হাজার। ভারত থেকে গরু না আসায় খুশি গরুর খামারিরা। ভালো দামের আশায় এবার তাঁরা বেশি করে গরু পালন করেছেন।

এবিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আশাদুল হক বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের হাটগুলোতে কুষ্টিয়ার গরুর আলাদা কদর রয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এ বছর জেলা থেকে প্রায় ৬০ হাজার গরু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় বড় জেলায় যাবে। গড়ে প্রতিটি গরু ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। এসব গরু বিক্রি থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আয় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়া জেলা পশু সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে-এবার জেলার ৬টি উপজেলায় ১৭হাজার ৮১০টি খামার রয়েছে। এরমধ্য গরু প্রায় নব্বই হাজার, ছাগল ৫০ হাজার এবং ভেড়া ৩ হাজারের মত। সবেচেয়ে বেশি খামার এবং পশু বেশি কুষ্টিয়া সদর উপজেলায়।

সদর উপজেলায় সরকারি মতে, ৪৪০০টি খামার যার গরুর পরিমান ২২ হাজারের বেশি। তবে সরেজমিনে জেলার খামারি এবং কোরবানির পশুর সংখ্যা অনেক গুন বেশি। সদর উপজেলা, কুমারখালী, খোকসা, দৌলতপুরে সবচেয়ে বেশি কোরবানীর পশু রয়েছে।

অন্য উপজেলাগুলোতে এর পরিমাণও কম নয়। জেলায় বেশি খামার রয়েছে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। ইউনিয়নগুলোর মধ্যে রয়েছে আইলচারা, উজানগ্রাম, ঝাউদিয়া, বটতৈল ও আবদালপুর ইউনিয়ন।

কুষ্টিয়া শহর ঘেঁষে কুমারগাড়া গ্রামে দুই শতাধিক গরুর খামার রয়েছে। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম তাঁর বাড়িতে ১০ বছর ধরে গরু মোটাতাজাকরণের খামার করে আসছেন।

তিনি বলেন, প্রতিবছর বড় বড় ষাঁড় ঢাকার বাজারে বিক্রির জন্য তিনি নিজেই নিয়ে যান। এ বছরও তাঁর খামারে ১৫টি গরু রয়েছে। এবার ভারত থেকে গরু না এলে ভালো আয় হবে বলে তিনি আশা করছেন। কুমারগাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হান্নান বলেন, তাঁর খামারে পাঁচটি গরু আছে। তিনি আশা করছেন এসব গরু বিক্রি করে প্রায় ১২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

উজানগ্রামের বাসিন্দা আয়নাল আলী কোরবানি ঈদ সামনে রেখে তিনটি গরু পালন করছেন। আগামী সপ্তাহে গরু তিনটি ঢাকার বাজারে নিয়ে যাবেন। তিনি আশা করছেন তিনটি গরু বিক্রি করে প্রায় আড়াই লাখ টাকা পাবেন। তাই তিনি ও তাঁর স্ত্রী সাহেরা খাতুন মিলে দিন-রাত গরু পরিচর্যা করে যাচ্ছেন।

বিত্তিপাড়া গ্রামের রোজদার আলী গত সপ্তাহে একটি গরু সাড়ে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। তাঁর আরও একটি গরু বাড়িতে বিক্রির অপেক্ষায় আছে। সেটির দামও লাখ টাকা হবে বলে জানান তিনি।

গরু ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহেও গরুর দাম চড়া ছিল। তবে হঠাৎ কয়েক দিন হলো দাম কিছুটা কমে গেছে। বাজার এখন ওঠানামা করছে। ভারতীয় গরু না এলে এ বছর খামারিরা ভালো লাভ করতে পারবেন।

সদর উপজেলার আবদালপুর গ্রামের খামারি মশিউর রহমান বলেন, ঈদের ১০ দিন আগে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেশি গরু যায়। এখন বাইরে থেকে ব্যাপারীরা গ্রামের হাটে আসতে শুরু করেছেন।

কুষ্টিয়ার গরুর সবচেয়ে বড় হাট সদর উপজেলার আলামপুরে। এ হাটের ইজারাদার রবিউল ইসলাম বলেন, শনিবার মূলত হাট বসে। প্রচুর গরু আসতে শুরু করেছে। চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকেও ব্যাপারীরা আসতে শুরু করেছেন। গরুর দাম গত বছরের থেকে বেশি হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে অবৈধ পন্থায় গরু মোটাতাজা করার ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এসব বিষয়ে খোঁজখবর রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই খামারে গিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, গরু খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সব সময় খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer