ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা : কন্যা শিশুর বিয়ে নয় সুযোগ পেলে তারা করবে জয়। ঠিক এমনি একটি কিশোরী ঝালকাঠির শারমিন। মায়ের কথা না মেনে বাবার বয়সী লোকের সাথে বাল্যবিবাহ না করে মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে আজ সে পেয়েছে ‘International Woman Courage Award’.
সাহসী সেই কিশোরী এখন ভাগ্যবিড়ম্বিত বহু কিশোরীর অনুপ্রেরণা। শারমিন চ্যানেল আই এর প্রতিভাবান ও সাহসী কিশোরীদের প্ল্যাটফর্ম ‘স্বর্ণকিশোরী’র একজন। পশ্চাদপদ পরিবার ও সমাজ থেকে উঠে আসার গল্প শোনাচ্ছে সে।
‘আমি যখন ৯ম শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার মা আমাকে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। শুধু চাওয়া না, বিয়ে দেয়ার জন্য এক রকম উঠেপড়ে লেগেছিল। কিন্তু আমি এত অল্প বয়সে বিয়েতে রাজি হয়নি। আমি মা কে বলেছিলাম, মা আমি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই। আমি অনেক বড় হতে চাই।’
‘কিন্তু মা আমার কথা শোনেনি তার নিজের সিদ্ধান্তে অটুট থাকে।আমাকে জোর করে বিয়ে দিতে নিয়ে যায় মামার বাড়িতে।সেখানে ঐ লোক আগে থেকেই উপস্থিত ছিল। মা সেই রাতে আমাকে জোর করে ঐ লোকের সাথে এক কক্ষে থাকতে বাধ্য করে। সব কিছুর পরও আমি একদিন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় কিন্তু আমাকে আবারও বাস থেকে নামিয়ে বাড়িতে এনে অত্যাচার করে। উপায় না পেয়ে আমি আমার মায়ের নামে মামলা করি’
‘এরপর ‘চ্যানেল আই’ থেকে আমাকে পুরষ্কৃত করা হয়। সেখানেই প্রথম ফারজানা ব্রাউনিয়া আপুর সাথে দেখা হয়। এই মানুষটির আদর্শে আমি বিমোহিত হয়ে পরি। এখন আমি উনাকে মা বলে ডাকি। এরপর প্রথম আলো আমাকে সম্মাননা দেয়। তারপর ঢাকা আমেরিকান সেন্টার থেকে আমাকে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয় অ্যাওয়ার্ড দেয়ার জন্য।’
‘‘সেখানে আমাকে ‘International Women Courage Award’ দেওয়া হয়। অ্যাওয়ার্ডটি পাওয়ার পর আমার যে কত ভালোলাগা এবং সম্মানবোধ কাজ করছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এই অ্যাওয়ার্ড শুধু আমার না,এটা আমার দেশের সব মেয়েদের জন্য।’’
নিজের কৈশোরের দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা যে আর কোনো কিশোরীর ক্ষেত্রে না ঘটে-তা নিয়ে সোচ্চার শারমিন। নিজের প্রত্যয়ের কথা এভাবেই জানাচ্ছে সে-‘আমেরিকাতে যাওয়ার পর ওখানে আরো ১১ জন সাহসী মেয়ের সাথে দেখা হয়। তাদের জীবনের সাহসী গল্প শুনে আমি আরো অনুপ্রাণিত হই। আমি লেখাপড়া করার পাশাপাশি আমার ঝালকাঠি জেলা সহ দেশের সকল কিশোরীদের নিয়ে কাজ করতে চাই। বর্তমানে স্বর্ণকিশোরীতে মেয়েদের নিয়ে কাজ করছি। আশা করি আমার কাজে আমি একদিন সফল হবই ইনশাআল্লাহ।’
বহুমাত্রিক.কম