Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৪ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে নিহত ১৩

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১১, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে নিহত ১৩

ঢাকা : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে পরপর দুটি কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবারের এ ঝড়ে রাজ্যটির রাজধানী কলকাতা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়াতেও আঘাত হানে কালবৈশাখী।এতে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। বিভিন্ন জায়গা রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।

প্রথম ঝড়টি আঘাত হানে মঙ্গলবার রাত ৭টা ৪২ মিনিটে। দ্বিতীয়টি ৭টা ৫৫ মিনিটে।আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, দ্বিতীয় ঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ১ মিনিট।

২০০৯ সালে আইলায় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১৩ থেকে ১২০ কিলোমিটার। ফলে ঝড় আরও কিছুক্ষণ থাকলে ভয়াবহ হতে পারত পরিস্থিতি।

কলকাতা ও সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তায় অন্তত ১৫০ গাছ ও গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে ঝড়ে। বে হালা পর্ণশ্রীর ডায়মন্ড হারবার রোডে গাছ পড়ে মৃত্যু হয় নিরুষ মিঞ্জের (৬৫)। লেনিন সরণিতে অটোর ওপরে গাছ পড়ে মারা যান অটোচালক মানোয়ার আলম (৫১) এবং যাত্রী আমরিন জাভেদ (২৭)।

আনন্দপুরের পশ্চিম চৌবাগায় বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয় মহম্মদ শাহিদের (৪০)। কলাকার স্ট্রিটে বহুতলের দেয়ালের একাংশ মাথায় পড়ে মারা যান অনীত শুক্ল (২৮)।

হাওড়ার বেলুড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গিরিশ ঘোষ রোডে গাছ পড়ে মারা যায় দশম শ্রেণির ছাত্রী খুশি মারিয়া (১৬)।

গাছ ভেঙে ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে তারাচাঁদ গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ৪৫ বছরের এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। ওই সাইকেলে থাকা এক তরুণী এবং এক কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বেলুড়ের গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও তার ছিঁড়ে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। আন্দুল রোডে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে জয়দেব দাস (২২) নামে এক বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়।

ডুমুরজলায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয় মুনমুন দাসের (২৩)। বজ্রাঘাতে বাঁকুড়ার ইন্দাসের তেঁতুলমুড়িতে সুকুমার ঘোষ (৩৪) এবং হুগলির হরিপালে তুলি মুখোপাধ্যায় (১৭) মারা যান।

হাওড়া স্টেশনের ১৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো একটি ট্রেনের ছাদে ভেঙে পড়ে বঙ্কিম সেতুর রেলিংয়ের প্রায় ৩০ ফুট লম্বা একটি অংশ।

পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড এবং মেন লাইন ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল।

লিলুয়ায় গ্রিডের সংযোগ বিকল হয়, গাছ পড়ে যায় হিন্দমোটরে। শিয়ালদহ মেন ও শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন আটকে পড়ে।

ঝড়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ে অফিস ফেরত মানুষ। রাত ৮টার দিকে দমদমের আপলাইনে গাছ পড়ে রাত পর্যন্ত মেট্রো চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে মেট্রোর দুজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বাস-ট্যাক্সিও কার্যত বন্ধ হওয়ায় কয়েক গুণ ভাড়া বাড়িয়ে দেয় অ্যাপ ক্যাব।

কলকাতা বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার হ্যাঙার থেকে ২০ ফুট দূরে থাকা ডেকানের একটি পরিত্যক্ত বিমান দাঁড়ানো ছিল। ঝড়ের দাপটে বিমানের মুখ ঘুরে গিয়ে সেটি একটি ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা মারে। অন্য একটি ছোট ‘সেসনা’ বিমানেরও মুখ ঘুরে যায়।

এদিকে ঝড়ের কারণে অবতরণ করতে না পেরে কলকাতার আকাশে চক্কর দেয় ১০টি বিমান।

রাত ৮টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকে বিধাননগর হাসপাতাল।

সল্টলেকের ইসি মার্কেটের কাছে গাছসহ একটি মন্দির ও দমদমের গোপাল চন্দ্র বোস লেনে একটি খালি বাড়ি ভেঙে পড়ে।

এদিকে ঝড়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন নবান্নের উত্তর গেটসংলগ্ন পুলিশ চৌকিটি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। জানা গেছে, ঝড়ের কিছুক্ষণ আগে নবান্ন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

আনন্দবাজার

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer