Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

ওয়ালটন ফ্যান রফতানি হচ্ছে বিভিন্ন দেশে

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:১৩, ২৩ জুন ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ওয়ালটন ফ্যান রফতানি হচ্ছে বিভিন্ন দেশে

ঢাকা : অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক ও রিচার্জেবল ফ্যান তৈরি করছে ওয়ালটন। নিজস্ব কারখানায় তৈরি এসব ফ্যানে ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের কাঁচামাল। দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন, সাশ্রয়ী মূল্য, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য বিক্রয়োত্তর সেবার কারণে ক্রেতাপছন্দের শীর্ষে উঠে আসছে ওয়ালটন ফ্যান। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ওয়ালটন ফ্যান রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিশ্ববাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনে গড়ে তোলা হয়েছে ফ্যান তৈরির আধুনিক কারখানা। যুক্ত হয়েছে জার্মানি, জাপান, তাইওয়ানের অত্যাধুনিক মেশিনারিজ ও প্রযুক্তি। রয়েছে ডিজাইন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্য গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। উচ্চ শিক্ষিত, মেধাবি ও দক্ষ প্রকৌশলী এবং টেকনিশিয়ানদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি শক্তিশালী কর্মীবাহিনী। যারা প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে দেশেই উৎপাদন করছে উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক ফ্যান বা পাখা।

ওয়ালটন কারখানায় তৈরি ফ্যানের মধ্যে রয়েছে সিলিং, ওয়াল, টেবিল, রিচার্জেবল এবং প্যাডেস্টাল ফ্যান। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানির লক্ষ্যে এসব ফ্যানের মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কঠোরভাবে। মান নিয়ন্ত্রণে অনুসরণ করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রোটেকনিক্যাল কমিশন (আইইসি)-এর স্ট্যান্ডার্ড।

ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান মো. রকিবুল ইসলাম জানান, রফতানি হচ্ছে ওয়ালটনের রিচার্জেবল, টেবিল, ওয়াল এবং সিলিং ফ্যান। ইতোমধ্যে নেপাল, নাইজেরিয়া, পূর্ব তিমুর ও সিসেলসে ফ্যান রফতানি হয়েছে। খুব শিগগিরই আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশেও যাচ্ছে ওয়ালটন ফ্যান।

ওয়ালটন ফ্যান আরএনডি বিভাগের ইনচার্জ প্রকৌশলী রুবেল আহমেদ জানান, স্থানীয় বাজারে নিম্নমানের সিলিং ফ্যানের বডি এবং পাখা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এমএস শীট অথবা কাস্ট আয়রন এবং প্লাস্টিক। ফলে, বাতাসের ধাক্কায় বা বেগের কারণে ধীরে ধীরে এর পাখার ডিজাইন অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন হয়ে যায়। কমে যায় বাতাস। মরিচা পড়ায় স্থায়িত্ব কম হয়। এসব ফ্যানের আর্মেচার বা কয়েলে কপার কোটেড অ্যালুমিনিয়াম তার ব্যবহার করায় মোটর দুর্বল হয়। অতিরিক্ত গরম হয়ে মোটর পুড়ে যায়। বিদ্যুৎ খরচ হয় বেশি, ওয়াট রেটিং বেশি হয়। গতিও কমতে থাকে। ম্যাগনেটিক শব্দ বেড়ে যায়। সাধারণ মানের বিয়ারিং এ গতি কমে যন্ত্রণাদায়ক শব্দের সৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে উন্নতমানের অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন সিলিং ফ্যানের বডি ও পাখা। বাতাসের ধাক্কায় পাখার ডিজাইন অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন হয় না। বাতাসও বেশি দেয়। মরিচা পড়ে না। ফলে টেকে অনেক বছর। ফ্যানে ব্যবহৃত মোটরের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে ওয়ালটনই প্রথম ব্যবহার করছে ইনলাইন কপার ভারনিশিং প্রসেস। ওয়ালটনের ইলেকট্রিক ফ্যানগুলোর আর্মেচার বা কয়েলে প্রায় শতভাগ (৯৯.৯৯%) বিশুদ্ধ এনামেল কপার এবং এইচ ক্লাস ইন্সুলেশন তার ব্যবহার করায় উচ্চ ভোল্টেজ ও তাপমাত্রায় মোটর সহজে পুড়ে যায় না। আবার প্রায় শতভাগ (৯৯.৯৯%) বিশুদ্ধ সিলিকন শীটে আর্মেচার বডি তৈরি করায় ওয়ালটন ফ্যানের তাপমাত্রা যেমন কম থাকে, তেমনি ওয়াট রেটিং হয় কম। উন্নতমানের ইউরোপীয়ান স্ট্যান্ডার্ড বলবিয়ারিং ও জাপানি ব্র্যান্ডের ক্যাপাসিটর ব্যবহার করায় ওয়ালটন ফ্যানের উচ্চ গতি বজায় থাকে।

ওয়ালটন সূত্রমতে, দেশীয় ব্র্যান্ডটির সিলিং ফ্যানে অ্যারোডায়নামিক ডিজাইনের প্রশস্ত ও লিফট অ্যাঙ্গেলযুক্ত পাখা ব্যবহারের ফলে বাতাস সমানভাবে ছড়ায়। অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি বাতাস দেয়। বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ৩৫ থেকে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত।

ওয়ালটনের টেবিল, দেয়াল, রিচার্জেবল ও প্যাডেস্টাল ফ্যানের পাখা তৈরিতে ইঞ্জিনিয়ারিং প্লাষ্টিক সান ব্যবহারের ফলে বাতাসের পরিমাণ হয় বেশি। এসব ফ্যান রিমোট ও ম্যানুয়াল বাটন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এসব ফ্যানে গিয়ার মোটর ব্যবহার করায় অসিলেশনের জন্য কোনো প্রকার নবের প্রয়োজন হয় না। থার্মাল প্রোটেক্টর ব্যবহারের ফলে সমস্যা ছাড়াই শব্দহীন মোটর চলে দীর্ঘদিন।

ওয়ালটনের রিচার্জেবল টেবিল ফ্যানে ব্যবহার করা হচ্ছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওভার চার্জ এবং ওভার ডিসচার্জ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি। রয়েছে সুইচ মোড পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেম। যা লো-ভোল্টেজেও ব্যাটারি ঠিকমত চার্জ করে। এসি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিসি কারেন্টে চলে। বিদ্যুৎ না থাকলে হাই-স্পিডে ৩ ঘন্টা এবং লো স্পিডে ৬ ঘন্টা পর্যন্ত চলে ওয়ালটন রিচার্জেবল ফ্যান। রিচার্জেবল টেবিলফ্যানের ব্যাটারিতে একমাত্র ওয়ালটনই দিচ্ছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি।

ওয়ালটনের হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেসের প্রোডাক্ট ম্যানেজার মাশরুর হাসান জানান, সাদা, নীল, গোলাপী ও ক্রীম কালারের ১৫ মডেলের সিলিং ফ্যান উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন। এসব ফ্যানের দাম পড়ছে ২ হাজার ৪৯০ টাকা থেকে ২ হাজার ৯৪০ টাকা পর্যন্ত। ক্রিম হ্যোয়াইট, ডার্ক ব্লু ও স্কাই ব্লু কালারে মোট ৬ মডেলের ওয়ালটন টেবিল ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে ২ হাজার ১৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৯৯০ টাকায়। এছাড়া ক্রিম হ্যোয়াইট, হ্যোয়াইট, ডার্ক ব্লু ও স্কাই ব্লু কালারে ৮ মডেলের দেয়াল ফ্যান মিলছে ২ হাজার ৩৯০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮৯০ টাকায়। রিচার্জেবল ফ্যানের রয়েছে ৯টি মডেল। এসব ফ্যানের দাম ৩ হাজার ৬৯০ টাকা থেকে ৪ হাজার ২’শ টাকা। প্যাডেস্টাল ফ্যানে রয়েছে পিংক, পার্পল, ক্রিম হ্যোয়াইট, স্কাই ব্লু, ব্ল্যাক কালারের মোট ১১টি মডেল। এর মধ্যে ট্রাইপড স্ট্যান্ডের ২টি মডেল রয়েছে। প্রতিটির দাম ৪ হাজার ৯৯০ টাকা। অন্য মডেলের প্যাডেস্টাল ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে ২ হাজার ৫’শ টাকা থেকে ৫ হাজার ৯৯০ টাকায়।

আইএসও সনদপ্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে দেশব্যাপী বিস্তৃত ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার ও ৩’শর অধিক কাস্টমার কেয়ার থেকে গ্রাহকদের দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও, ২৪ ঘন্টা সচল রয়েছে কাস্টমার কেয়ার কল সেন্টার। গ্রাহকরা ১৬২৬৭ নাম্বারে কল করে জানাতে পারবেন বিক্রয়োত্তর সেবার অনুরোধ।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer