Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

ঈদে পর্যটক মুখর টাংগুয়ার, বারেকটিলা, ট্যাকেরঘাট ও যাদুকাটা

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৭:৪৩, ২৮ জুন ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ঈদে পর্যটক মুখর টাংগুয়ার, বারেকটিলা, ট্যাকেরঘাট ও যাদুকাটা

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

সুনামগঞ্জ হাওরাঞ্চল ঘুরে : সুনামগঞ্জের হাওরবেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটক ও স্থানীয় জনসাধারণের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। সারা বছরেই এই পর্যটন স্পটগুলো দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুদের সমাগম থাকলেও ঈদ মৌসুমে তা বেড়ে যায় যায়।

প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলোতে পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। কেউ মটরসাইকেলে, কেউ স্পিডবোটে, আবার কেউ ইঞ্জিন চালিত নৌকায় দলবেধে হাজির হচ্ছেন এসব নয়নাভিরাম স্থানগুলোতে।

তাহিরপুর উপজেলায় রয়েছে-মাদার ফিসারিজ খ্যাত টাংগুয়ার হাওর। সীমান্তঘেষা ৩শ’ ফুট উচ্চতার বারেক টিলা, উপজাতিদের মন্দির, মেঘালয় পাহাড়ের জলপ্রপাত, শাহ আরফিন (রা:) আস্তানা, সনাতন হিন্দু-ধর্মাবলাম্বীদের পূণ্যতীর্থ, উঁচুনিচু পাহাড়ের সারি, ঘনসবুজের সমারোহ, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প, সীমান্ত লেক, ৩টি শুল্ক ষ্টেশন (চারাগাঁও, বড়ছড়া, বাগলী), মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, ভারতের মেঘালয়ের বুক চিড়ে নেমে আসা ছোট বড় ২০টি পাহাড়ী ছড়া, রাজা উইক্লিবস এর বাড়ি, আওলী জমিদার বাড়ি, পাহাড়ী যাদুকাটা নদী, ঝর্না।

এছাড়াও রয়েছে মেঘ, বৃষ্টি, উপজাতি ও বাংলাদেশীদের একত্রে বসবাসের এক মিলনমেলা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোরম পরিবেশ। যা পর্যটকদের মুগ্ধ না করে পারে না। এবারের ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে অনেকেই মোবাইল ফোনে নিজেকে সেইসব সৌন্দর্যের অংশীদার করতে তুলে রাখছেন সেলফি। অনেকেই একান্তে বসে খুশির আড্ডা জমিয়েছেন।

এই নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আর্কষণে দেশ-বিদেশী হাজার দর্শনার্থী আসেন এ উপজেলায়। টাংগুয়ার হাওরের একটি প্রবাদ আছে-নয়কুড়ি বিল, ছয় কুড়ি কান্দার সমন্বয়ে গঠিত শত বর্গ কিলোমিটারের এই হাওর। এই টাংগুয়ার হাওরে নানান প্রজাতির বনজ ও জলজ প্রাণী এ হাওরের সৌন্দর্যকে আরো দর্শনীয় করেছে।

বর্ষায় টাংগুয়ার হাওর এক বিশাল সমুদ্রের রূপ ধারণ করে আর শীতের সময় টাংগুয়ার হাওরকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলে। তাই বছরের দুটি ঈদ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আগমন বেশি লক্ষ্যনীয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয় নি। শিশু থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী হাজার হাজার মানুষের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে টাংগুয়ার হাওর, বারেকটিলা, ট্যাকেরঘাট, সীমান্ত লেক, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান সহ দর্শনীয় স্থানগুলো।

এবার হাওর পাড়ে একমাত্র বোরো ধান অকাল বন্যায় পানিতে তুলয়ে যাওয়ায় ঈদের আনন্দ নেই। তবুও হাওর পাড়ের সংগ্রামী,পরিশ্রমী মানুষগুলো একটু আনন্দ খোঁজার চেষ্টায় অনেকেই বেড়িয়ে পড়েছেন এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলোতে।

স্থানীয়রা জানান, তাহিরপুর বাসী শুধু কি আশার বাণী শুনতেই বেচে আছি। এখানে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হবে বলে শুনছি অথচ এখনো কোন কাজের লক্ষণ দেখছি না।

এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোতে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী সৌরভ দাস, নাজির হোসেন, নাইম, মেহেদী হাসান ভুঁইয়া (জনমেজর) বলেন, এবার হাওরের বোরো ধান অকাল বন্যায় পানিতে ডুবে ক্ষতির কারণে ঈদের আনন্দ না থাকলেও এ উপজেলার পর্যটন সমৃদ্ধ স্থানগুলো ঈদ উপলক্ষে দেখতে ভুলে যায় নি পর্যটকরা। দেখতে ভাল লাগে তাই আমরা এসেছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

তারা বলেন, টাংগুয়ার হাওর ও বারেকটিলায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা এখন সময়ের দাবি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা না হওয়ায় পর্যটকদের এখানে বেড়াতে আসা কষ্টের হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হলে স্থানীয় বেকার যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কারুজ্জামান কামরুল বলেন, টাংগুয়ার হাওর ও বারেকটিলা তাহিরপুর উপজেলার আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উপযোগী স্থান। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হলে তাহিরপুরের স্থানীয় জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer