ঢাকা : চৈত্রের শেষ কয়েকদিন থেকেই দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। চৈত্র সংক্রান্তিতেও দিনভরই ছিল গনগনে রোদ। বৃষ্টি হয়নি দেশের কোথাও। বৈশাখের প্রথম দিন তথা বাংলা নববর্ষের দিনটিতেও তাপপ্রবাহে উত্তপ্ত থাকবে ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, ঢাকা, ফরিদপুর, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, পাবনা ও রাঙ্গামাটি অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে শুক্রবারও (১৪ এপ্রিল)।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, পহেলা বৈশাখে বৃহস্পতিবারের মতই তাপমাত্রা থাকবে। আর কোথাও কোথায় বাড়তে পারে, আবার সামান্য কমতেও পারে।
নববর্ষের দিনটিতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা একেবারেই কম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন। তবে বিক্ষিপ্তভাবে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া ও ময়মনসিংহে খুবই সামান্য বৃষ্টিপাত হতে পারে।
গতকাল সন্ধ্যা সোয়া সাতটা পর্যন্ত ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রখর রোদে মানুষকে হাসফাঁস করতে দেখা গেছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পহেলা বৈশাখে বৃষ্টির কারণে রাজধানীবাসীকে ভুগতে হবে না, কারণ ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, বইবে মৃদু তাপপ্রবাহ- এমনটাই বলছে আবহাওয়া অফিস। ফলে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ দিনের অন্যান্য অনুষ্ঠান ভালভাবেই উদযাপন করতে পারবে রাজধানীবাসী। শুক্রবার ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৩৯ মিনিটে এবং সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ৩৬-৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে মৃদু, ৩৮ এর চেয়ে বেশি থেকে ৪০ ডিগ্রিকে মাঝারি ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।
অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মধ্যে ময়মনসিংহে ৩৪ দশমিক ২, চট্টগ্রামে ৩৪ দশমিক ৫, সিলেটে ৩৪ দশমিক ৫, রংপুরে ৩৩ দশমিক ৩, খুলনায় ৩৬ দশমিক ৫, বরিশালে ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে তবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আগামী ৪৮ ঘণ্টা অর্থাৎ দুই দিন পর আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে জানিয়ে আহাওয়া অফিস বলছে, বর্ধিত ৫ দিনের পূর্বাভাসের শেষ দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসের জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) এবং অন্যত্র এক থেকে দু’টি মৃদু (তাপমাত্রা ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (তাপমাত্রা ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।