Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১০ ১৪৩১, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪

‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো যা করছে-এটা রীতিমতো নির্যাতন’

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:২১, ৫ নভেম্বর ২০১৭

আপডেট: ১৫:৩৩, ৫ নভেম্বর ২০১৭

প্রিন্ট:

‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো যা করছে-এটা রীতিমতো নির্যাতন’

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা : দেশের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর অতি ব্যবসায়ি মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেছেন বিশিষ্টজনরা। রাজধানীর ইনডেপেন্ডেন্ট স্কুলের ওপেন হাউস ডে-তে অংশ নিয়ে তারা বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো যা করছে-এটা রীতিমতো নির্যাতন। 

উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত এ স্কুলটিতে শনিবার এ অনুষ্ঠান হয়। দেশের প্রথম ন্যাশনাল কারিকুলাম এ চালিত স্কুলটির ওপেন হাউস ডে-তে শিক্ষকমণ্ডলী, অভিভাবক ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত আলোচকরা বলেন, উচ্চবিত্তের শিশুদের উন্নত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবসা হিসেবে এদেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের যাত্রা শুরু হলেও, বর্তমানে এসব স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী মধ্যবিত্ত পরিবারের। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। সন্তানের উন্নত ভবিষ্যতের কথা ভেবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মা-বাবা নিজেরা অভুক্ত থেকেও সন্তানদের এসব স্কুলে ভর্তি করান। কিন্তু সত্যিকার অর্থে শিশুরা কি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছে কিনা?

তারা বলেন, বাংলাদেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল মানেই লক্ষাধিক টাকা দিয়ে শিশুদের স্কুলে ভর্তি করা, তের-চৌদ্দ হাজার টাকা মাসিক বেতন দেওয়া, বিশ কী পঁচিশ কেজি ওজনের বই-খাতার স্কুলব্যাগ পিঠে নিয়ে কুঁজো হয়ে ক্লাসে ঢোকা, ইত্যাদি ইত্যাদি। শিশুদের বইয়ের বোঝা বইবার বিষয়টি অমানবিক হলেও কারও তাতে মাথাব্যথা নেই। ফলে লেখাপড়া শিশুদের কাছে বিষাদময় রূপ ধারণ করছে। তাছাড়া পড়াশোনার চাপ বাড়তে বাড়তেও সেটা দুঃসহ পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

অতিথিরা বলেন, শিশুরা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। বইয়ের ভার বহন করে তারা মেরুদণ্ড বাঁকা হওয়ার মতো মারাত্নক ঝুঁকির মধ্যে যাচ্ছে।সেই ক্ষেত্রে বাংলা মিডিয়াম স্কুল গুলোর চিত্র এতো ভয়াবহ নয়।

আলোচকরা আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ভর্তি, সেশন ফি ও মাসিক বেতন শুধু বেমানান বললে ভুল হবে, এটা রীতিমতো নির্যাতন। এটা সম্ভব হচ্ছে এসব স্কুলের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে। সেই ক্ষেত্রে বাংলা মিডিয়াম স্কুল গুলোতে এসব অভিযোগ অনেক কম।

তারা আরও বলেন, দেশের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো সরকারের নিয়ম-নীতির ধার ধারে না। বলা যেতে পারে যে, সরকারও পুরোপুরি নির্বিকার। সরকারি নীতিমালা না থাকায় স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে বলারও কিছু নেই। এগুলো চলছে মর্জিমাফিক। ইচ্ছেমতো টিউশন ফি আদায় করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন বাধ্যতামূলক মনে করছে না। ভাড়াবাড়িতে স্কুল বসিয়ে দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াতে গিয়ে অভিভাবকরা যত বাধার সন্মুখীন হন না কেন, এর প্রতিকার নেই। কারণ শিক্ষা প্রশাসন এর কোনো দায়িত্ব নিচ্ছে না।

স্কুলটির অধ্যক্ষ নাজমা আরিফ বলেন, ইনডেপেন্ডেন্ট স্কুল এসব স্কুলের মত শিক্ষাদান বা আচরণ করেনা। আমরা বাংলা মিডিয়াম হলেও দেশের অন্যান্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের চেয়ে পিছিয়ে নেই। ইনডেপেন্ডেন্ট স্কুল গতানুগতিক বাংলা মিডিয়াম স্কুলের পাঠদান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা আঙ্গিকের স্কুল। আমাদের স্কুলের ছাত্রদের স্কুল পিরিয়ডের পর টিচিং করলেও আমরা মাসিক বেতনের বাহিরে আলাদা কোন কোচিং ফি নিই।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব ডাঃ চৌধুরী মোহাম্মদ বুলবুল হোসাইন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এর পরিচালক সৈয়দ জাফর আলি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক আজাদ হোসাইন চৌধুরী, , ব্যারিস্টার লিয়াকত আলি খান, সাংবাদিক একেএম শরিফুল ইসলাম খান, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারমান আরিফ মোতাহার এবং স্কুলটির অধ্যক্ষ নাজমা আরিফ।

ইনডেপেন্ডেন্ট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিবাবক, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer