Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১০ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

আশুলিয়ায় দোকানে আগুন, থানায় মিথ্যা অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

আশুলিয়ায় দোকানে আগুন, থানায় মিথ্যা অভিযোগ

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

সাভার :  শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার পানধোয়া বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনটি দোকান ভস্মিভুত হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আগুণ লাগার এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় প্রায় ১ ঘন্টার চেষ্টায় আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজার ব্যবসায়ী তুলার দোকানদার মোঃ মুক্তাদিরের ঘর থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুন পাশের দোকান ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মুক্তাদিরের তুলার দোকান, ইমনের কাঠের দোকানসহ আদুল মান্নান নান্তুর ফার্নিচারের দোকানটি পুড়ে যায়। এতে প্রাথমিক ভাবে প্রায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী দোকান মালিকদের।

ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ও প্রতিপক্ষকে হয়রানী করার লক্ষে চালানো হচ্ছে নানা কুট-কৌশল। সরেজমিন অনুসন্ধান ও একাধিক স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক আব্দুল লতিফের সাথে তার আপন ছোট ভাই আব্দুল জলিল মাস্টারের দীর্ঘদিন যাবত জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। গত ২০১৬ইং সালের ৭ ও ৮ই ডিসেম্বর আব্দুল লতিফ তার তিন ছেলে মোতালেব, মুসলিম, কামরুল সহ ২০/২৫ জন ভাড়াটে সান্ত্রাসি বাহিনী নিয়ে আব্দুল জলিলের ২৫/২৬বছর যাবত ভুগ-দখলকৃত ১৮শতাংশ জমি এবং জমির উপর নির্মাণকৃত পাকা দোকান ও বসত বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। সেসময় আব্দুল জলিলের স্ত্রী সাজেদা বেগম, তার ২ছেলে মারুফ ও আল আমিন সহ তার অন্য জ্যা অধ্যাপক আব্দুস সালামের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম কে লোহার পাইপ, সাবল ও চাপাতি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে আব্দুল লতিফের বাহিনী।

পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

এঘটনায় আব্দুল লতিফ, মোতালেব, মোসলেম, কামরুল, রাকিব ডালিম সহ তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে ঢাকার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন আব্দুল জলিল ও আব্দুস সালামের পরিবার (যার নম্বর- ৩৫১/২০১৬ এবং ৩৬১/২০১৬)।

মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদী পক্ষকে নানা ভাবে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছিলো। মামলা তুলে না নেওয়ায় বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো সহ প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি অব্যাহত রাখে। আব্দুল লতিফের ছেলেদের এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকিতে জীবনের শঙ্কায় আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিলের পরিবার আশুলিয়া থানায় পর পর ২টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেন (যার নম্বার-১১০ এবং ৮২৮)।

এছাড়া আব্দুল লতিফ গত ২৭শে আগস্ট তার ছেলে কামরুল সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আব্দুল জলিলের ছোট ছেলে আল-আমিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার পাইপ, লোহার রড দিয়ে মাথায় এবং সারা শরীরে নির্মম ভাবে রক্তাক্ত জখম করে। সে সময় মসজিদের ইমাম সহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসায় প্রাণে বেঁচে যান আল আমিন। পরে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় আব্দুল জলিল বাদী হয়ে ঘটনায় জড়িত আব্দুল লতিফের ছেলে কামরুল, রাকিব সহ তাদের ভাড়াটে বাহিনীর সদস্যদের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় ১টি হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করেন (যার নম্বর-০৫-০৯-২০১৭, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩২৬/৫০৬)।

এদিকে শনিবার (২০শে জানুয়ারী) সকাল ৯টার দিকে আব্দুল লতিফের তিনটি দোকান ঘর বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে আগুন লেগে পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ও প্রতিপক্ষকে হয়রানী করার লক্ষে আব্দুল লতিফের ছেলে মোসলেম উদ্দিন ১৫লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি সহ আব্দুল জলিলের ছেলে মারুফ, আল আমিন এবং আব্দুস সালামের পরিবারের সদস্যদের দিকে সন্দেহ জনক ইঙ্গিত করে একটি অভিযোগ পত্র দায়ের করেন।

আগুন লাগার ঘটনার পর পরই আব্দুল লতিফের ছেলে মোসলেম, কামরুল, মোতালেব তার চাচা আব্দুল জলিল ও আব্দুস সালামের পরিবারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো সহ হত্যার হুমকি দিতে থাকে।

এমতাবস্থায় তাৎক্ষণিক আইনের আশ্রয় নিতে আশুলিয়া থানায় উপস্থিত হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেন হুমকির শিকার ওই দুই পরিবার (যার নম্বর-১৩৬৯)।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলেও তিনি জানান।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer