Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আমি গর্বিত: প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ

ড. মো. হুমায়ুন কবীর

প্রকাশিত: ২০:৫২, ৬ এপ্রিল ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

আমি গর্বিত: প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

আমরা জাতি হিসেবে অত্যন্ত গর্বিত এজন্য যে আমাদের বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আর এ উন্নয়নের একক কৃতিত্বের দাবীদার বলতে হয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। একদিকে যেমনি করে তিনি দেশের উন্নতি করে, দেশের মানুষের মঙ্গল কামনায় দেশকে বিশ্বদরবারে একটি মর্যাদাশীল আসনে মেলে ধরছেন।

অন্যদিকে তেমনি আবার নিজের গুণেই নিজে গুণান্বিত হয়ে আন্তর্জাতিক ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি একদিকে যেমন মাদার অব হিউম্যানিটি অভিধায় অভিষিক্ত হচ্ছেন, অপরদিকে দেশকে দুর্নীতি মুক্তির দিকে নিয়ে গিয়ে, জঙ্গি দমন করে উত্তরোত্তর অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে বিশ্বের দ্বিতীয়, সৎ, যোগ্যতম, স্বচ্ছ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের জায়গা করে নিতে পেরেছেন। তিনি বিশ্বের নারী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তার জন্য দশ জনের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন।

যাহোক, এগুলো এখন একটু পুরানো কথা। নতুন কথা হলো এসব উন্নয়ন ও সফল কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁর একদল সুদক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলী ও পরামর্শক রয়েছেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সদা-সর্বদা সৎপরামর্শ দিয়ে দিয়ে ভালো ভালো কাজগুলো করিয়ে চলেছেন। তেমনি একটি কাজ সম্প্রতি তিনি করেছেন যার একটি হলো ময়মনসিংহকে দেশের দ্বাদশ সিটি করপোরেশন হিসেবে ঘোষণা করা। এটি অনেকটা পূর্বের ধারবাহিকতায় একটি রাজনৈতিক দাবি পূরণ। কারণ এর আগে তাঁর সরকার ময়মনসিংহকে অষ্টম বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।

কিন্তু আমি যে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আজকের এ লেখা লিখছি এবং যার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তা সম্পূর্ণভাবেই আলাদা এবং নতুন। কারণ তিনি মন্ত্রিসভায় ময়মনসিংহকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জেলার ইংরেজি বানানকে বাংলা বানানের সাথে সামঞ্জস্যতা তৈরী করেছেন। আমার বিবেচনায় সেটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ এসব স্থানের বাংলা বানান একরকম আর ইংরেজি বানান অন্যরকম। যা দেখলেই বোঝা যেতো ইংরেজি সেই বানানটি ব্রিটিশ আমলের। অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলে ইংরেজগণ যেসব স্থানের নাম বিকৃতভাবে উচ্চারণ করতেন, কালক্রমে সেসব বানানই ইংরেজিতে প্রচলিত রয়ে যায়। অথচ সেসব স্থানের বাংলা বানান আমাদের অত্যন্ত পরিচিত।

এসব বাংলা বানানের সাথে ইংরেজি বানান সংশোধন করে সামঞ্জস্যতা সৃষ্টির জন্য অতীতে অনেকেই অনেকভাবে প্রস্তাব করে লিখেছেন যা অনেক সময় পত্র-পত্রিকায় আমিও দেখেছি। আমি যেহেতু পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখি এবং নিয়মিত পড়ি। সেজন্য এসব আমার দৃষ্টি এড়ায়নি। কাজেই আমার বিবেকবোধ থেকে সেসকল কিছু স্থানের ইংরেজি বানানের অসাঞ্জস্যতা তুলে ধরে ২০১৭ সালে একটি নিবন্ধ লিখি যা জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বসহকারে ছাপানো হয়। আমার সে লেখাটির যুক্তি ছিল ইতিপূর্বে ইংরেজি ঢাকা (Dacca) পরিবর্তন করে -Dhaka লিখে ঠিক করে সংশোধন করা হয়, তেমনিভাবে কলকাতা (Calcutta) কে Kolkata হিসেবে ঠিক করে সংশোধন করা হয়।

কাজেই বর্তমানে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা- কুমিল্লা (Comilla-Kumilla), যশোর (Jessore-Jashor), বগুড়া (Bogra-Bogura), চট্টগ্রাম (Chittagong-Chattagram), বরিশাল (Barisal-Barishal), ময়মনসিংহ (Mymensingh-Moymonsinho), কক্সবাজার (Cox’s Bazar-Coxa Bazar)সহ আরো কিছু নামের অসামঞ্জস্যতা তুলে ধরেছিলাম।

আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত এজন্য যে আমার সেই প্রস্তাব থেকে কুমিল্লা (Kumilla), যশোর (Jashor), বগুড়া (Bogura), চট্টগ্রাম (Chattagram), বরিশাল (Borishal)- এ পাঁচটি নাম সংশোধন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এখন কথা হলো দীর্ঘদিন পর যেহেতু এসব পরিবর্তন শুরু করেছেন নিশ্চয়ই এটিই শেষ নয়। এ কাজটি যেন প্রয়োজনে ধারাবাহিকভাবে চলে তার অনুরোধ রাখছি।

সেটি সম্প্রতি প্রশাসনিক সংস্কার বিষয়ক নিকারের সভায় গৃহীত হয়েছে যা এখন থেকে নতুন সংশোধিত ইংরেজি বানানে পরিচিত হবে। দেশের অনেক গুণীজনের প্রস্তাবের সাথে আমার প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ায় আমি সত্যিই গর্বিত। কারণ ব্রিটিশ আমল থেকে চালু হয়ে আসা এসব বাংলা ও ইংরেজি বানান এক না হওয়ায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ তাঁর পরামর্শকবৃন্দ, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেইসাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এ বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আরো যারা প্রস্তাবনা দিয়ে লেখালেখি করেছেন।

‘কিছু স্থানের বাংলা ও ইংরেজি নামের মধ্যে অসাঞ্জস্যতা’, ‘যেসব স্থানের বাংলা ও ইংরেজি নামের বানানে অসামঞ্জস্যতা’ ইত্যাদি কয়েকটি শিরোনামে আমার লেখা সম্পাদকীয় কলামগুলো দৈনিক সংবাদে ০৪/০২/২০১৭ তারিখে, দৈনিক আমাদের সময়ে ৩১/০১/২০১৭ তারিখে, দৈনিক ভোরের কাগজে ২৮/০২/২০১৭ তারিখে, দৈনিক বর্তমানে ২৭/০১/২০১৭ তারিখে, দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকা এবং বহুমাত্রিক.কমসহ আরো কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। আজকের আমার এ প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর সেটির অংশীদার সেসব পত্রিকাগুলোও। তারা এসব লেখা প্রকাশ করে আমাকে কৃতজ্ঞতা বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন।

আমি যেহেতু জনসচেতনতামূলক লেখালেখির স্বীকৃতি হিসেবে ইতোমধ্যে পাক্ষিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্মাননা-২০১৫, বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২২ এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউিশন বাংলাদেশ (কেআইবি)-২০১৮ তে ভূষিত হয়েছি যা যথাক্রমে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আমার হাতে তুলে দিয়েছেন।

সেজন্য নিজের দায়বদ্ধতা আরো বেড়ে গেছে বলে মনে করি। আর সেজন্যই এ ধরনের জনসচেতনতামূলক ও জনহিতকর লেখনি আমার একটি নেশা। আমার এ নেশার এ স্বীকৃতি আরো একটি বড় সম্মান যার জন্য সতিই আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট যারপর নাই কৃতজ্ঞ। আর জনহিতকর এমন একটি কাজের সাথে সংযুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।

লেখক: ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

email: [email protected]

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer