সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে গোদরেজ এগ্রোভেট প্রাইভেট লিমিটেডের শিশু শ্রমিক কাইয়ূম হোসেন (১২)কে পায়ুপথে হাওয়া ঢুকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। কাইয়ুম সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের বিলগজারিয়া গ্রামের ইলিয়াস আলীর ছেলে।
পায়ূপথে হাওয়া দেওয়ায় তার নাড়ি ফুটো হয়ে যাওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিরাজগঞ্জ জেলারেল হাসপাতাল থেকে রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার দুপুরে তার অপারেশন হয়েছে।
এর আগে শনিবার ওই কারখানর স্টোর হাউজের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সদর উপজেলার বিলগজালিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে জাকিরুল (১৪) কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
শিশুটির মা ববিতা খাতুন ও অন্যরা জানান, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিলগজারিয়া গ্রামের কাইয়ুম হোসেন ভদ্রঘাট এলাকায় এসিআই গোদরেজ এগ্রোভেট প্রাইভেট লিমিটেডে ক্লিনার শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। তার সঙ্গে একই গ্রামের হাবিবুর রহমান শেখের ছেলে জাকিরুল ইসলামও কাজ করে।
শনিবার সকালের দিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় জাকিরুলের সঙ্গে কাইয়ুমের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ধুলাবালি পরিষ্কার করার মেশিনের পাইপ কাইয়ুমের পায়ুপথে ঢুকিয়ে হাওয়া দেয় জাকিরুল। এতে কাইয়ুমের পেট ফুলে যায়। অন্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সার্জিক্যাল ইউনিটে ভর্তি করা হয়। রাতেই তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, পায়ু পথে বাতাস দেওয়ায় শিশু কাইয়ুমের নাড়ির কিছু অংশ ছিঁড়ে গেছে। তার চিকিৎসায় সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. আবদুল মোত্তালেবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের সিদ্ধান্তে তার শরীরে অপারেশনের সিদ্ধান্তে তাকে দুপুরে অপারেশন করে পোস্টঅপারেটিভ রুমে নেওয়া হয়েছে। এরপর ২৪ ঘণ্টা তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ চলবে। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তাহলে তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে নয়তো আবার আইসিইউতে স্থানান্তর করা হবে।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাসুদেব সিনহা জানান, ঘটনার পর পরই ছেলেটির মা ববিতা খাতুন ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে মর্মে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জাকিরুলসহ দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এসিআই গোদরেজ এগ্রোভেট প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার সৈকত বড়ুয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বিষয়টি জানেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম