Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১০ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত আনিসুজ্জামানের ‘বিপুলা পৃথিবী’

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত আনিসুজ্জামানের ‘বিপুলা পৃথিবী’

ঢাকা : মস্কো, ১৯৭৩। প্রাচ্যবিদ্যার আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ভারত থেকে এসেছেন নীহাররঞ্জন রায়, বরুণ দে, রোমিলা থাপর এবং আরও অনেকে।

সিঁড়ির মুখে পাকিস্তানের প্রতিনিধি, পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহমদ হাসান দানির সঙ্গে দেখা হয়ে গেল বাংলাদেশের এক পণ্ডিতের। মাত্র দু’বছর আগে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। দানি সাশ্রুনয়নে জড়িয়ে ধরলেন বাংলাদেশিকে, ‘শুনলাম, মুনীরকে নাকি ওরা মেরে ফেলেছে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনীর চৌধুরি, তাঁর লাশটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে তুরস্কের এর্দোগান, ফ্রান্সের মারিন ল্য পেন-অধ্যুষিত দুনিয়াকেও যেন বাংলা ভাষায় লেখা এই বই ক্ষুদ্র জাতীয়তাবাদের বিপদ থেকে সতর্ক করে দিল, যাবতীয় সীমানা ছাপিয়ে হয়ে উঠল আন্তর্জাতিক।

এ বারের আনন্দ পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন কৃষ্ণা বসু, রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, সেলিনা হোসেন ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিক ভাবে মনোনীত কিছু বইয়ের মধ্যে থেকে তাঁরা নিজের পছন্দ অনুসারে একটি করে বইকে নির্বাচন করেন।

সেই তালিকায় ছিল: অনিতা অগ্নিহোত্রীর ‘মহানদী’, আনিসুজ্জামানের ‘বিপুলা পৃথিবী’ এবং পথিক গুহের ‘ঈশ্বরকণা, মানুষ ইত্যাদি’। সেই খবর আগেই (১৫ এপ্রিল) প্রকাশিত হয়েছে। এর পর পাঁচ বিচারক তিনটি বই নিয়ে আলোচনা করেন।

কয়েক দশক ধরে পথিক গুহের তন্নিষ্ঠ বিজ্ঞাননিবন্ধ রচনার গুরুত্ব বিশেষ ভাবে স্বীকৃত হয়, ওড়িশার মহানদী সন্নিহিত অঞ্চলের জল-জঙ্গল-মানুষের বিপন্নতার কথা বলে অনিতা অগ্নিহোত্রী বাংলা সাহিত্যের সীমা কী ভাবে আরও প্রসারিত করলেন, স্বীকৃত হয় সেই কৃতিও। শেষ অবধি বিচারকরা স্থির করেন, ‘বিপুলা পৃথিবী’ই পাবে এ বারের আনন্দ-অর্ঘ্য।

আনিসুজ্জামানের আত্মজীবনীর প্রথম দুই খণ্ড ‘কাল নিরবধি’ ও ‘আমার একাত্তর’ সাহিত্যরসিকের কাছে পরিচিত। তৃতীয় খণ্ডের বৃত্তান্ত শুরু যুদ্ধশেষে লেখক যখন দেশে ফিরছেন। রাস্তায় ভাঙা রেলসেতু, পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত বাঙ্কার। কিন্তু যুদ্ধজয়ই শেষ নয়। তার পরই আসল কাজ: দেশটাকে গড়ে তোলা। সেই গড়ার প্রাক্কালে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন ছাত্র দাবি তুললেন, তাঁদের হস্টেলের মেসে গরুর গোশত খাওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। আনিসুজ্জামান হতভম্ব। পাকিস্তান আমলেও ছাত্ররা এ-হেন অন্যায় আব্দার ধরেনি।

এই বই ব্যক্তির জীবন ছাপিয়ে হয়ে উঠেছে উপমহাদেশের সার্বিক ট্রাজেডির প্রতিচ্ছবি। কুষ্টিয়ার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লোকসংস্কৃতি-গবেষক আবুল আহসান চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘এই বই যেন দেশ, সমাজ, সংস্কৃতি, সমকাল সম্পর্কে অন্তরঙ্গ ভাষ্য।’’ আনন্দবাজার পত্রিকা

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer