ছবি: বহুমাত্রিক.কম
নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আত্রাই শাখা নদীর মুখ অবৈধ ভাবে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সুদরানা গ্রামে আত্রাই শাখা নদীর মুখ দখল করে আত্রাই নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ভরাট করা হচ্ছে।
জায়গাটি প্রভাবশালীরা অবৈধ ভাবে দখল করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে মোঃ নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, জেলার আত্রাই উপজেলার সুদরানা গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত একটি শাখা নদী নাটোর জেলার সিংড়া থানার সেরকোল নদীর সাথে সংযোগ ছিল। নদীটির গুরুত্ব অত্যান্ত বেশি ছিল যে দুই উপজেলার প্রায় ১০-১২টি গ্রামের কৃষকের মালামাল আনানেওয়ার একমাত্র মাধ্যম। এছাড়া ওইসব এলাকার মাঠের সকল পানি ওই শাখা নদী দিয়ে আত্রাই নদীতে প্রবাহিত হতো।
১৯৮৫/৮৬ সালে উপজেলার বিষা ইউনিয়ন এবং নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে আত্রাই শাখা নদীর মুখ বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সেখানে মারপিটের ঘটনাও ঘটে। শাখা নদীর মুখের পাশে এখন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ বাজার গড়ে উঠেছে। যোগাযোগের জন্য করা হয়েছে পাকারাস্তা।
এরপর দীর্ঘদিন শাখা নদীর ওই মুখ দখলমুক্ত ছিল। হঠাৎ গত ১৫-১৮ দিন আগ থেকে একটি প্রভাবশালী মহল সুদরানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে নদীর ওই মুখ দখল করে ড্রেজার মেশিনের বালু দিয়ে ভরাট করছে। এ নিয়ে এলাবাসীর মধ্যে এক ধরনের চাপাক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শাখা নদীর ওই মুখে একটি সুইচগেট নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনে দাবী থাকলেও আজো পুরণ হয়নি। জায়গাটি ভরাট হয়ে গেলে জেলার আত্রাই এবং নাটোরের সিংড়া উপজেলার এলাকার সাধারন কৃষকের চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, নদীর মুখ দখল করে যারা ভরাট করছেন তারা প্রভাবশালী ক্ষমতাসিন দলের লোক। ভবিষ্যতে যদি সেখানে স্লুইচগেট নির্মাণ করা হয় তাহলে স্কুলের নামে যে জায়গাটা দখল করে ভরাট করা হচ্ছে তাহলে সম্ভব হবেনা। স্লুইচগেট নির্মাণ করা হলে এলাকাবাসীরা উপকৃত হবেন। এটা দীর্ঘদিনের দাবী ছিল এলাকাবাসীর।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আনছার আলী বলেন, জায়গাটা অনেক দিন থেকে পড়ে থাকায় ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ভরাট করছি। সেখানে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য দোকানঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে। জায়গাটা পত্তন নেয়া আছে। এছাড়া প্রতি বছরই খাজনা দিতে হয়। ভরাটের পশ্চিম পার্শে নদীর জায়গা পড়ে আছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সুদরানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, দখলের বিষয়টি পূরোটা মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্র। ১৯৬৭ সাল থেকে স্কুল ওই জায়গাটা দখল করে আছে। ব্যাক্তিগত ভাবে দখল করা হয়নি। এখানে কোন নদী ছিলনা। ১৯৮৮ বন্যায় পানি গড়িয়ে যাওয়ায় সেখানে গর্ত হয়। সেখানে বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে যেন অকেজো হয়ে পড়ে না থাকে।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেছার রহমান বলেন, অবৈধভাবে নদীর জায়গা দখলের বিষয়টি মুঠোফোনে একজন জানিয়েছেন। রবিবার (আজ) ঘটনাস্থলে ভূমি কমিশনারকে পাঠাবেন বলে জানান তিনি।
বহুমাত্রিক.কম