ছবি-বহুমাত্রিক.কম
ঢাকা : আত্মহত্যার প্রবণতা সব সময়েই কমবেশি থাকলেও সম্প্রতি এটি বেড়েছে উদ্বেগজনকহারে। এনিয়ে দেশে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রতিবছর প্রায় দশ লক্ষ মানুষ আত্মহত্যা করে বলে ধারণা করা হয়।
সম্প্রতি দেশে অসংখ্য আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলেও এর প্রতিকারে সামাজিক কোনো পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। তবে যাদের মাঝে আত্মহত্যার এই প্রবণতা সবচে’ বেশি সেই তরুণরাই এগিয়ে আসছেন ভয়ানক এ ব্যাধি রুখে দিতে।
আত্মহত্যা থেকে জীবনের পথে-সুস্থতার পথে ফেরাতে সচেতনতার তৈরীর লক্ষে গড়ে উঠেছে ‘আর নয় আত্মহত্যা’ নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির কর্মীরা কেবল সচেতনতা তৈরীই নয়-সমাজে এধরণের মানসিক অবসাদগ্রস্তদের খোঁজে বের করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতেও সহযোগিতা করবে।
শুক্রবার রাজধানীর পান্থপথে এক ইফতার ও আলোচনা অনুষ্ঠানে মিলিত হয়েছিলেন সংগঠনটির কর্মীরা। নতুন গড়ে ওঠা এই সংগঠনটির নেতৃত্বে আছেন তরুণ নির্মাতা তারেক মিয়াজী ও ফাহাদ সিদ্দিকী। তারা যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এর সংগঠক সদস্য হিসেবে আছেন, সুমাইয়া মিজান রাত্রি, ইসমত জাহান মীম, সুমকি হিমাদ্রী, ও মেহেদি হাসান।
সংগঠনের সভাপতি তারেক মিয়াজী জানান, সামাজিক এই ব্যাধি নির্মূলে আমরা দেশজুড়ে কাজ শুরু করেছি। খোঁজে খোঁজে বের করার চেষ্টা করছি যারা মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে ভয়ানক পথ বেছে নিচ্ছেন তাদের।
তারেক বলেন, ‘জীবন অনেক সু্ন্দর। নিজের জীবনকে ভালোবাসতে হবে সব ধরণের হতাশার মাঝেও-এই সহজ কথাটি আমরা তাদের বোঝাতে চেষ্টা করি। এরই মাঝে চট্টগ্রামের শীলা নামে (ছদ্মনাম) একটি মেয়েকে নিয়ে আমরা কাজ করছি। যার পরিবার বলতে কেউ নেই। মা-বাবাহারা ওই মেয়েটিকে এক লম্পট বিয়ের কিথা বলে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে সটকে পড়েছে। সে এখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।’
‘জীবনের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে সে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। আমরা তাকে সহযোগিতা দিয়ে সে পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসতে চেষ্টা করছি’-যোগ করেন তারেক মিয়াজী।
ফেসবুকে সংগঠনের কর্মকাণ্ড : https://www.facebook.com/events/1714176042189854/
আত্মহত্যা সম্পর্কে কিছু তথ্য
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি বছর সারা বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটে তার মধ্যে আত্মহত্যা ত্রয়োদশতম প্রধান কারণ। কিশোর-কিশোরী আর যাদের বয়স পঁয়ত্রিশ বছরের নিচে, তাদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে আত্মহত্যা। নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার হার অনেক বেশি। পুরুষদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা নারীদের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ।
উন্নত দেশে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চরম মুহুর্তজনিত হটলাইন রয়েছে যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের চিন্তা-ভাবনা এবং আত্মহত্যার পরিকল্পনার কথা জানায়। হটলাইন ব্যবহারের মাধ্যমে ভুক্তভোগী তার সমস্যার সমাধানের পথ সম্পর্কে অবহিত হয়ে আত্মহত্যা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিজেকে ভালবাসাকে আত্মহত্যা থেকে বাঁচার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বহুমাত্রিক.কম