ছবি : পিআইডি
ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশ সবসময় আলোচনার মাধ্যমে এ অঞ্চলের সকল সমস্যা সমাধান করতে চায়।
বাংলাদেশ সফররত ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের সংগে স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তিসহ বিভিন্ন চুক্তি বাস্তবায়ন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ, তার ভূখন্ডকে ব্যবহার করে কখনোই কোনভাবেই কোন সন্ত্রাসী বা সন্ত্রাসবাদি গোষ্ঠীকে প্রতিবেশি দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসি কার্যকলাপ পরিচালনা করতে দেবে না।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদ সমূলে উৎপাটনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ সমূহের মধ্যে আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ সামাজিক ব্যাধিকে মোবাবেলা করা সম্ভব। তবে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের কোন কোন দেশের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে রাজনাথ সিং বলেন, ৭.৭৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভবত বিশ্বে সর্বোচ্চ এবং দ্রুত বর্ধনশীল জিডিপি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করে বলেন, সে বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছিল।
ভারত ও বাংলাদেশ একযোগে সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদ প্রতিরোধে একসাথে কাজ করে বিশেষ সাফল্যলাভ করেছে বলে দুইনেতা উল্লেখ করেন। যে সকল দেশ সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদ দ্বারা আক্রান্ত তাদেরও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগুলি সক্রিয়ভাবে প্রতিরোধে কাজ করা উচিত। গৃহমন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সরকারের নিরাপত্তা উদ্বেগ মোকাবেলায় সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
দুইনেতা গত একবছরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের বিষয়ে আলোচনা করেন। ভারতের মন্ত্রী এই বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের নিজ বাসস্থানে দ্রুত, নিরাপদে ও স্থায়ীভাবে ফিরে যাওয়ার জন্য সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান। এই প্রসঙ্গে, ভারত রাখাইন রাজ্যে প্রি-ফাব্রিকেটেড হাউজিং নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পে কাজ করছে, যাতে বাস্তুহারা মানুষগুলির প্রয়োজন মেটাতে পারে। ভারত সরকার ত্রাণ সামগ্রী ও সরবরাহ প্রদান অব্যাহত রাখবে, যাতে বাংলাদেশ সরকার ত্রাণ ক্যাম্পে তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল সেক্রেটারি বর্ডার ম্যানেজমেন্ট ব্রজরাজ শর্মা,বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা এবং বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দীন আহম্মদ চৌধুরী এবং পুলিশের আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।