Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আগৈলঝাড়ার ঝুঁকিপূর্ণ ‘তাজমহল’ সংরক্ষণের দাবি

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ৫ নভেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

আগৈলঝাড়ার ঝুঁকিপূর্ণ ‘তাজমহল’ সংরক্ষণের দাবি

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত ফুল্লশ্রী গ্রামে ঐতিহ্যবাহী বাংলার ‘তাজমহল’টি এখন ধ্বংসের পথে। স্থাপত্যশিল্পটি নির্মাণের পর সংস্কারের অভাবে এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে শিল্পটিকে সংস্কারসহ রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী ও পর্যটকরা।

সরেজমিনে জানা গেছে, বাংলা ১৩৪৭ সালে জমিদার কামিণী গুপ্তের দ্বিতীয় পুত্র ডা. শরৎ চন্দ্র গুপ্ত তার পূর্বপুরুষদের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজবাড়ির পুকুরপাড়ে ভারতের আগ্রার ‘তাজমহল’র আদলে ৭টি মূল স্তম্ভের ওপর বর্গাকারে একটি সমাধি নির্মাণ করেন।

সমাধির নামকরণ করা হয় কালীতারা নিত্যানন্দ স্মৃতিমন্দির। নির্মাণশৈলীর নৈপুণ্যের কারণে এতদাঞ্চলের মানুষ এটিকে ‘তাজমহল’ নামেই আখ্যায়িত করেছে। সমাধিটি এমনভাবে তৈরী করা হয়েছে যেদিক থেকেই তাকানো হোক না কেন দেখতে ঠিক ‘তাজমহল’র ন্যায়।

অনেক দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা এই স্থাপত্যশিল্পটি দেখার জন্য প্রতিনিয়ত এখানে আসেন। ‘তাজমহল’র গায়ে খোদাই করে লেখা আছে আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের প্রভাবশালী জমিদার কামিণী গুপ্তের পুত্র ডা. শরৎ চন্দ্র গুপ্ত কর্তৃক তার মাতা কালীতারাসহ বংশের যশোঃ প্রসাদাৎ ভূবি, প্রতক্ষ্য ভূতভুবি, দিষ্টা দাশগুপ্ত, পক্ষভুব সুন্দরানী ও তাজমহলের পশ্চিমপাশে জ্যোতি কালীমোহন দাশগুপ্ত, উত্তরে পিতৃসম সত্যভামা গুপ্তসহ তিনটি সমাধিক্ষেত্র রয়েছে। চারপাশে রয়েছে চারটি মিনার যা তাজমহলকে আরও মনোরম করেছে।

সুত্রমতে, জমিদারের মৃত্যুর পরে বাড়ির পাহারাদার চন্দন দাসকে জমিদারের স্ত্রী কালিতারা সমস্ত সম্পত্তির অর্ধেক লিখে দেন। বাকি সম্পত্তি প্রয়াত নিমাই ডাক্তার ও তার বংশধররা ভোগদখল করে আসছে। সূত্রটি আরও জানায়, ২০০৫ সালে স্থানীয়রা ‘তাজমহল’র মধ্যে পানবরজের মালামাল রাখলে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিলে এতে স্থাপত্যশিল্পটির অনেক ক্ষতি হলেও অদ্যাবধি কোন সংস্কার করা হয়নি।

স্থানীয় গৃহবধূ নীলিমা দাস জানান, বর্তমানে ওই জমিদারের ১৭টি পরিবার ভারতে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছেন। তিনি আরও জানান, এ স্থাপত্যকীর্তিটি যেমন রক্ষণাবেক্ষণ করা দরকার, তেমনি শিল্পটির সমস্ত সম্পত্তি উদ্ধার করতে পারলে এখানে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। কেননা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অনেক লোক এখানে আসেন এই মনোরম স্থাপত্যশিল্পটি একনজর দর্শনের জন্য।

স্থানীয় ব্যবসায়ী শৈলেন দাস জানান, এখন পর্যন্ত সংস্কার করার কথাতো দূরের কথা, আজ পর্যন্ত সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন কর্তাব্যক্তি একদিন এটি দেখতেও আসেন নি। সমাধির অনেক সম্পত্তি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে দখল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। একটি বিশেষ মহলের সাথে সখ্যতার কারণে তাদের হাত অনেক লম্বা থাকায় স্থানীয় নিরীহ অধিবাসীরা তাদের প্রতিরোধ করতে পারছেনা।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer