Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

আগামী মাসে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

আগামী মাসে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে

ঢাকা : রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৩২০ (৬৬০ × ২) মেগাওয়াটের দুইটি ইউনিট নির্মাণ কাজ আগামী মার্চের শেষনাগাদ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরেজমিন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে জানান, প্রকল্পের ৯১৫ একর জমির মাটি ভরাট কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকল্প এলাকা ঘিরে উঁচু বেস্টনি দেয়াল, প্রকল্পের ভেতরে বেশিরভাগ কাশবন তৈরি, ৫টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, অফিস ও আবাসন এবং কর্মকর্তাদের ছোট আবাসন এবং কেয়ারটেকারদের বাসস্থান নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

মহাসড়ক থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে নতুন ৬ কিলোমিটার সড়ক ধরে শত শত শ্রমিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজের জন্য ছুটছেন। তারা সিমেন্টের ব্লক তৈরি করছেন, ইট, পাথর নামাচ্ছেন এবং জেটি থেকে অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী নামাচ্ছেন।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য মূল প্লান্টের পশ্চিম পাশে পশুর নদীতে দু’টি পল্টুন ও জেটি স্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লি. (পিভিটি) অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক অরুন চৌধুরী বাসসকে বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরে নিরাপত্তা দেয়াল কনক্রিটের ব্লক দিয়ে তৈরি হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরঙ্গা ইউনিয়নের সাপমারী-কাটাখালী এবং কাইগর্দাশকাঠি মৌজার ৯১৫ একর জমির ওপর বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে ২০১২ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (পিভিটি) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

বিআইএফপিসিএল’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিনোদ ভ্যায়ার বাসসকে বলেন, আগামী মাসের শেষনাগাদ মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

মোট ৯১৫ একরের মধ্যে ৪২০ একর জুড়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল কাজ ২০১৯-২০ অর্থবছরে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হেবি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড অব ইন্ডিয়া মূল প্লান্ট নির্মাণ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশিষ্ট জমিতে কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং শ্রমিকদের আবাস স্থল, স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।

বিনোদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর হবে না। এ প্রকল্পে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজিসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

বিশ্বে বনভূমির কাছে তৈরি বিভিন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা তুলে ধরে বিনোদ বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন থেকে অন্তত ২১ কিলোমিটার এবং ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে।

এজিএম অরুন চৌধুরী বলেন, বিপিডিবি এবং ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) সমান ৫০ শতাংশ করে মালিকানায় থাকবে।

এ প্রকল্পে ১৪,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ের ৭০ শতাংশ এক্সিম ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে।
তিনি বলেন, প্রকল্প যদি অন্য কোন স্থানে তৈরি হয় তাতে আমাদের কোন দ্বিমত নেই।

বিআইএফসিএল’র ম্যানেজার (জনসংযোগ) আনোয়ারুল আজিম বলেন, প্রকল্পে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি, ৯০২ ফুট চিমনি এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

প্রতিদিন ১১ হাজার টন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যবহার হবে এবং এসব কয়লা ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৬০০ বেশি লোক সরাসরি এবং ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক পরোক্ষভাবে প্রকল্প থেকে লাভবান হবেন।

তিনি বলেন, মহাসড়কের বাবুবাড়ি এলাকা থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা তাদের উৎপাদিত চিংড়ি এবং শস্য কম খরচে বাজারজাত করার সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় লোকরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ পাবেন।

পদ্মা সেতু নির্মাণের পর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে, বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। এ জন্য বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বিআইপিসিএল’র উপ-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও নিরাপত্তা) অলিউল্লাহ একথা বলেন।

তিনি বলেন, এই প্রকল্প সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর নয়, পরিবেশবাদীরা প্রকল্পের বিরোধীতায় যে আন্দোলন করছেন তা অযৌক্তিক।

২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেড়ামারা থেকে সুইচ টিপে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer