Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

অ্যাসিড সহিংসতার শিকার রিপার পাশে মহিলা আইনজীবী সমিতি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০০:৫৭, ৩ অক্টোবর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

অ্যাসিড সহিংসতার শিকার রিপার পাশে মহিলা আইনজীবী সমিতি

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

নেত্রকোনা : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার আদমপুর গ্রামে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি জোর করে অ্যাসিড পান করিয়ে হত্যারচেষ্টার শিকার গৃহবধূ রিপা রানী পণ্ডিতের (২৪) পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি।

সংগঠনটি অ্যাসিড সহিংসতার শিকার রিপার পুনর্বাসনের জন্য ৩২ শতক কৃষি জমি বন্ধকীর ব্যবস্থা করে দেয়। ‘এসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশন’ ও স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ‘স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির সহযেগিতায়’ এ উপলক্ষ্যে রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রিপার বাবার বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার সতরশ্রী গ্রামে কমিউনিটি সভার আয়োজন করা হয়।

ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ও নারী নেত্রী কোহিনূর বেগমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী।

বক্তব্য দেন জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আলী আকবর ভূইয়া, স্বাবলম্বীর উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক বেগম রোকেয়া, এসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মৌসুমী শারমিন প্রমুখ।

গত বছরের ২৬ জুলাই দুপুরে কিশোরগঞ্জের আদমপুর গ্রামে যৌতুক পরিশোধ করতে না পারায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি রিপাকে একটি ঘরে আটকে জোর করে মুখে পানিমিশ্রিত অ্যাসিড ঢেলে দেন। এতে মুখ, গলা ও জিব পুড়ে যায়।

স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপরে জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় রিপার বাবা সাধন পণ্ডিত বাদী হয়ে ওই বছরের ৩১ জুলাই কটিয়াদি থানায় রিপার স্বামী রতন পণ্ডিত, শ্বশুর রবি পণ্ডিত এবং শাশুড়ি কল্যাণী রানী পণ্ডিতকে আসামি করে মামলা করেন।
এ নিয়ে ১ আগস্ট খবর প্রকাশিত হয়। পুলিশ এখনো মামলার প্রধান আসামি রতনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অপর দুই আসামিদের গ্রেপ্তার করলেও কিছু দিন পর তারা জামিনে বেরিয়ে যায়।

এ দিকে রিপার মা দেবী রানী পণ্ডিত গতকাল কান্না জড়িতকণ্ঠে বলেন, আত্মীয়ের মধ্যে আমার একটি মাত্র মেয়েকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে দিয়েছিলাম। জামাই, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে নির্যাতন করে অ্যাসিড পান করিয়েছে।

মেয়ে আমার এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বর্তমানে বক্ষ-ব্যধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কিছুই খেতে পারে না। কথা বলতে পারে না। বাইরে পাইপ দিয়ে তরল জাতীয় খাবার খাইয়ে রাখা হচ্ছে। শরীরে হাড়, রগ ছাড়া কিছুই নেই।

ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, মেয়েটির চিকিৎসা করতে গিয়ে তাঁর বাবা সহায়-সম্বল সব হারাতে হয়েছে। এখন আর তাঁদের কিছুই নেই।

পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী রিপার পরিবারের কাছ থেকে ওই সহিংস ঘটনার বিবরণ শুনে তিনিও চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি। পরিবারটিকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতার আস্বাস দিয়ে বলেন, এটি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। পলাতক থাকা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer