ছবি: বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার : জেলার শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া এলাকায় ৭ দিন ধরে মাটিতে পড়ে কাতরানো গুরুতর আহত পোষা মাদি হাতি ‘রাজলক্ষী’ অবশেষে মারা গেছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় হাতিটি মারা যায়। কমলঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের আহতাবস্থায় ৩৪ বছর বয়সি হাতিটিকে সর্বাত্মক সেবা শ্রুশুষা দিয়েও সুস্থ্য করা যায়নি।
শুক্রবার রাত ১০টায় হাতিটির কর্মস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রাকযোগে আনার সময় শ্রীমঙ্গলের মৌলভীবাজার সড়কের ৫ নম্বর ব্রিজের পাশে ট্রাক থেকে নামানোর সময় হাতিটির কোমর ও পায়ে আঘাত পাপ্ত হয়ে ৭দিন ধরে অসুস্থাবস্থায় ছিল।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কাজের জন্য হাতিটিকে ভাড়ায় খাটানো হতো। কয়েক মাস আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক লোক সার্কাসের জন্য রাজলক্ষিকে ভাড়া নেয়। দুই মাস কাজ বন্ধ থাকায় খাওয়ানোর জন্য তাকে কমলগঞ্জ নিয়ে আসছিলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে হাতিটিকে শ্রীমঙ্গল গরুর বাজারে না নামিয়ে অন্য স্থানে নামানোর সময় হাতিটির কোমর ও পায়ে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
এরপর থেকে হাতিটিকে শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের কর্মকর্তারা চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভ্যাটেনারি সার্জন ডা. আরিফুর রহমান জানান, তিনি ৭দিন ধরে হাতিটিকে ঢাকা চিড়িয়াখানা ও ডুলুহাজরা সাফারী পার্কের চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা প্রদান করেন। বুধবার সন্ধার পর থেকে সে খাবার বন্ধ করে দিলে হাতিটিকে খাবারের যোগান হিসেবে স্যালাইন দেয়া হয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে একটু একটু খবার নিলেও পরিমানে ছিল খুবই কম।
তিনি জানান, তার ধারনা হাতিটির মেরুদন্ডে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। এক্সরে করার সুযোগ নেই। হাতিটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ২০ লিটার স্যালাইন দেয়া হয়। তবে হাতিটি একই স্থানে কাঁদায় থাকার কারনে গর্তে পরিণত হয়। বুধবার বিকেলে অন্য একটি হাতি দিয়ে টেনে তার স্থান পরিবর্তন করা হয়।
হাতিটির মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, তার দাদার আমল থেকেই তারা হাতি পালন করে আসছেন। এক সময় তাদের ৮টি হাতি ছিল, এখন আছে মাত্র দু’টি। অপর একটি হাতি তাদের এক চাচার অংশে পড়েছে। আর এই রাজলক্ষির মা পড়ে ছিলো তাদের অংশে। তিনি জানান, এই রাজলক্ষিই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম। এই হাতিটির কিছু হলে তাদের পরিবার পথে বসবে।
বহুমাত্রিক.কম