Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৯ ১৪৩১, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪

অজানা রহস্যে ঘেরা সেন্টিনেল দ্বীপ

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১৯ জুন ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

অজানা রহস্যে ঘেরা সেন্টিনেল দ্বীপ

ঢাকা : আন্দামান-নিকোবরের অধীন উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে মাত্র ৪০০ মানুষের বাস। তারা জানে না আগুনের ব্যবহার, এমনকি চাষাবাদ। তাদের কাছে এখনও পৌঁছায়নি আধুনিকতার ছোঁয়া। এমনকি তাদের সম্পর্কে কিছুই জানে না কেউ।

রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপ। তবু এই দ্বীপে পৌঁছতে পারেনি আধুনিক সমাজের ছোঁয়া। বাইরের জগতের কারও নাক গলানো মোটেও সহ্য করে না এখানকার বাসিন্দারা।

নৌকা বা হেলিকপ্টার থেকে বছরের পর বছর নজর রেখে তাদের সম্পর্কে একেবারেই অল্প ধারণা পেয়েছেন নৃতত্ত্ববিদরা। বিশ্বের অন্য যেসব উপজাতি আছে, তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা সেন্টিনেলরা।তারা একজন আরেকজনের সঙ্গে যে ভাষায় কথা বলেন, তা তাদের সবচেয়ে কাছের উপজাতির পক্ষেও বোঝা অসম্ভব। মনে করা হয়, এই আদিম মানুষেরা আফ্রিকা থেকে এসেছিলেন এই দ্বীপে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই সম্ভবত বিশ্বের শেষ উপজাতির আবাসস্থল, যাদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি আধুনিক সমাজ। এখানকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন তাও জানে না কেউ। দ্বীপটিতে প্রবেশের অনুমতি নেই কারও।

৬০ হাজার বছর ধরে দ্বীপটির বাসিন্দারা এখানে আছেন। আধুনিক সমাজের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলছে অনেক আগে থেকেই। তার আভাস পাওয়া যায়, মার্কোপোলোর একটি লেখায় দ্বীপটির উল্লেখ থেকে।

১৮৮০ সালে ব্রিটিশ নৃতত্ত্ববিদ এম ভি পোর্টম্যানের নেতৃত্বে একটি দল ওই দ্বীপে যান। কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপনের বদলে তারা উপজাতিদের এক বয়স্ক দম্পতি এবং চার শিশুকে নিয়ে আসেন আধুনিক সমাজের সঙ্গে তাদের পরিচয় করানোর জন্য।

কিন্তু আধুনিক সমাজে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পেরে রোগাক্রান্ত হয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই মারা যান তারা। এই ঘটনার পর আধুনিক সমাজের প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সেন্টিনেলরা।

১৯৬৭ সালে থেকে ভারত সরকার যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা শুরু করে। ভারতীয় নৃতত্ত্ববিদ ত্রিলোকনাথ পণ্ডিতই প্রথমবারের মতো ১৯৯১ সালের ৪ জানুয়ারি দ্বীপটিতে গিয়ে সেন্টিনেলদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হন। কিন্তু সেই চেষ্টা পুরোপুরি সফল হয়নি। কারণ এই চেষ্টার পরও ওই উপজাতিরা বাইরের মানুষকে তাদের রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। প্রতিবার তাদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।

এরপর ২০০৪ সালে সুনামির পর হেলিকপ্টারে দ্বীপটিতে ত্রাণ নিয়ে যায় ভারত সরকার। তখনও ত্রাণ নেয়ার বদলে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে অতর্কিতে পাল্টা আক্রমণ চালায় তারা। অবশেষে তাদের বিরক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

শেষমেশ উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ এবং তার চারপাশের ৩ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সীমানা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer