ফাইল ছবি
ঢাকা : ঢাকা শহরের যান্ত্রিকতায় আর প্রতিদিনের ব্যস্ততায় হাঁপিয়ে উঠেছে মন। ভাবছেন, কোথাও থেকে ঘুরে আসা যায়? তাহলে ঘুরে আসতে পারেন সুনামগঞ্জের চুনাপাথরের হ্রদ নীলাদ্রি থেকে।
যেখানে গেলে আপনি খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারবেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। নীলাদ্রি যাবার সঠিক সময় হলো বসন্ত।
শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতেই ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে। ভারতের কোলঘেঁষে চুনাপাথরের হ্রদ নীলাদ্রি। এর কোলে কিছু সময় কাটাতে পারলে ভুলে যাবেন জীবনের সব ক্লান্তি।
নীলাদ্রির নীল জলে সূর্যের বসন্ত আলো খেলা করে। পানি স্বচ্ছ নীল। নীলাদ্রির ওপাশে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়। নীলাদ্রিতে পানি তুলনামূলক কম।
পানিতে পা রাখলেই বুঝে যাবেন এখনো শীতকালের রেশ রয়ে গেছে। পানি কিছুটা ঠাণ্ডা। মাঝে মাঝে পানির নিচে শেওলার সঙ্গে পা লেগে যেতে পারে। চার-পাঁচ পা সামনে এগুতেই ঠাঁই হারিয়ে ফেলবেন। কারণ হঠাৎ করেই নীলাদ্রি গভীর হয়ে উঠে।
এতো দূর এসে নীলাদ্রির নীল জলে গোসল না করলে জীবন বৃথা হয়ে যাবে।এসময় চাইলে তার নীল জলে একটু সাঁতার কেটে নিতে পারেন।
তবে সাঁতার না জানলে পানিতে নামার সময় তা জানে এমন একজনকে সঙ্গে রাখতে হবে। এটি চুনাপাথরের হ্রদ। বেশিক্ষণ গোসল করলে কান ও চোয়াল ভারি হয়ে আসবে।
তাই বেশিক্ষণ গোসল না করাই ভালো। তবে নীলাদ্রির নীল পানিতে গোসল করলে মন হয়ে যাবে ফুরফুরে। ক্লান্তি ভুলে হারিয়ে যাবেন অসীম আনন্দে।
এসময় চাইলে ফটোসেশনের কাজটিও সেরে নিতে পারেন। নীলাদ্রি গেলে আশপাশে কোনো ভালো খাবারের হোটেল পাবেন না। তাই শুকনো জাতীয় খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে রাখতে হবে।
হ্রদের ওপারে মেঘালয়ের পাহাড়।
বৃষ্টি হলে সেই পাহাড় বেয়ে নেমে আসে চুনাপাথর। পাথর তোলার জন্য ছোট হ্রদটি স্থাপন করা হয়েছে। সারাদেশে ব্যবহৃত চুনাপাথরের বিশাল অংশ এখান থেকেই আসে। নীলাদ্রির পূর্বপাশে রয়েছে টিলা। নীলাদ্রিকে ভালোভাবে দেখার জন্য সেই টিলায় উঠতে পারেন।
টিলায় উঠে নীলাদ্রিকে দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যাবে। শান্ত মেয়ের মতো পাহাড়ের নিচে বসে আছে সো টিলা। নীল জল রঙিন শরীর, মন উদাস করে দেয়। এসময় ভুলে যাবেন শহুরে জীবনের প্রচণ্ড চাপের কথা।
ভাববেন, এমন জীবন-ই তো সারাজীবন চেয়েছি। কোলাহল, ব্যস্ততা, ক্লান্তি ভুলে সারাজীবন যদি এখানে কাটিয়ে দিতে পারতাম।
যেভাবে যাবেন
নীলাদ্রি হ্রদ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ইউনিয়নের টাকেরঘাট ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা থেকে বাসে করে সুনামগঞ্জ নতুন ব্রিজে নামতে হবে।
এ ব্রিজ থেকে মোটরসাইকেলে করে সরাসরি নীলাদ্রি লেকে যাওয়া যায়। নতুন ব্রিজ থেকে নীলাদ্রি লেকে মোটরসাইকেলে দু’জনের ভাড়া ৫০০ টাকা।